শেখ হাসিনা-রেহানার পূর্বাচলে প্লট নৈতিকতার পরিপন্থী: টিআইবি

- আপডেট সময় : ০৭:৩০:১৪ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ৪২ বার পড়া হয়েছে

পূর্বাচল উপশহরে শেখ হাসিনা পরিবারের ৬০ কাঠা জমি বরাদ্দে আইনের ব্যত্যয় না হলেও নৈতিকতার পরিপন্থী। এমন যুক্তিতে বরাদ্দ বাতিলের দাবি ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি)। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, নৈতিকতার নিরিখে শেখ হাসিনার পরিবারের বিশেষ সুবিধায় প্লট নেয়া ঠিক হয়নি।
রাজউক জানিয়েছে, প্লট ৬টি বাতিল হবে কিনা, সিদ্ধান্ত নেবে গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়। রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) পূর্বাচল উপশহর। একপাশে নদী, তিন পাশ সড়ক। ১০ কাঠা করে পাশাপাশি ৬টি প্লটের মোট ৬০ কাঠা জমির মালিক শেখ হাসিনা পরিবারের ৬ সদস্য।
রাজউক আইনের ১৩’র এ বিধি অর্থাৎ বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ সুবিধার আওতায় প্লট ৬টি দেয়া হয় শেখ হাসিনাসহ তার পরিবারের ৬ সদস্যকে। এরা হলেন, সজীব ওয়াজেদ জয়, সায়মা ওয়াজেদ পুতুল, শেখ রেহানা, রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক ও আজমিনা সিদ্দিক। এ রকম বিশেষ সুবিধায় বরাদ্দ প্লটের তালিকা করে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে।
রাউজকের সাবেক চেয়ারম্যান নূরুল হুদা বলেন, যদি একজনকে একটা প্লট দেয়া হয় তাহলে আইনের ব্যতয় হয়নি। কারণ ঢাকায় বাড়ি থাকলেও তিনি পূর্বাচলে পাবেন।
রাজউক চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব:) মো. ছিদ্দিকুর রহমান সরকার বলেন, আমরা মন্ত্রণালয়ে চিঠি দিয়েছি, আমরা তো বরাদ্দ দেই না। বরাদ্দ দেয়া হয় ওপর থেকে। রাজউক শুধু ব্যবস্থপনা করে। এ রকম বরাদ্দ অনেক আছে। হাইকোর্ট থেকে যে আদেশ আসবে সে অনুযায়ী আমরা কাজ করবো।
রাজউকের প্লট বরাদ্দে ১৩’র এ ধারা রাখাই হয়েছে ক্ষমতার অপব্যবহারের জন্য মন্তব্য করে টিআইবি নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, এটি কিন্তু করা হয়েছে ক্ষমতার অপব্যবহার করে। তার সাথে কিন্তু আইনের নীতিমালা ১৩’র এ ধারা অপব্যবহার করে এই বরাদ্দ গুলো নেওয়া হয়েছে। উদ্দেশ্যমূলোকভাবেই এই ধারাটা প্রণয়ন করা হয়েছিল, যেটা আমরা শুরু থেকেই প্রতিবাদ করেছিলাম।
প্রসঙ্গত, ২০২২ সালের ৩ আগস্ট এই ৬টি প্লটের বরাদ্দপত্র ইস্যু করে রাজউক। পুরো প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন হয় অত্যন্ত গোপনীয়তার সঙ্গে। তখন এর চেয়ারম্যান ছিলেন আনিসুর রহমান। এর আগে শেখ হাসিনা ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের নামে পূর্বাচলে ৬০ কাঠা প্লট বরাদ্দ বাতিলসহ রাজউকের সকল বরাদ্দ বাতিলের নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্ট বিভাগে রিট আবেদন করেন সুপ্রিম কোর্টের ১০ জন আইনজীবী।
ওই রিট আবেদনে বলা হয়, রাজউকের উপপরিচালক (এস্টেট ও ভূমি-৩) নায়েব আলী শরীফ স্বাক্ষরিত চূড়ান্ত বরাদ্দপত্রে লেখা হয় ‘কাঠা প্রতি ৩ লাখ টাকা হিসাবে ১০ কাঠার প্লটের মোট মূল্য ৩০ লাখ টাকা নির্ধারণ করা হলো।’ শেখ হাসিনা ছাড়াও ১০ কাঠা করে প্লট নেন তার ছেলে সজীব আহমেদ ওয়াজেদ (জয়) ও মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ (পুতুল)। তাদের প্লট নম্বর যথাক্রমে ১৫ এবং ১৭। পরে ১০ নভেম্বর প্লটের মালিকানা সংক্রান্ত রেজিস্ট্রি সম্পন্ন হয়। এরআগে ২ নভেম্বর পুতুলের নামেও ১০ কাঠা প্লটের বরাদ্দপত্র ইস্যু করা হয়। এতে এস্টেট ও ভূমি-৩ শাখার তৎকালীন উপপরিচালক হাবিবুর রহমানের স্বাক্ষর রয়েছে।
এর মধ্যে জয়ের নামে প্লটের বরাদ্দপত্র জারি করা হয় ২০২২ সালের ২৪ অক্টোবর। তবে, শুধু হাসিনা ও তার ছেলেমেয়ে নন; পূর্বাচল প্লকল্পে ১০ কাঠা করে প্লট নেন তার ছোট বোন শেখ রেহানা ও তার ছেলেমেয়ে। তাদের নামেও যথারীতি প্লট বরাদ্দ করা হয় ২৭ নম্বর সেক্টরের ২০৩ নম্বর রোডের একই জায়গায়। সেখানে শেখ রেহানার প্লট নম্বর ১৩, তার ছেলে রাদোয়ান মুজিব সিদ্দিকের প্লট নম্বর ১১ ও মেয়ে আজমিনা সিদ্দিকের প্লট নম্বর ১৯।
বাংলাদেশ জার্নাল/কেএইচ