প্রথম দিনই সাকিবের জন্য কঠোর বার্তা বিসিবি সভাপতির

- আপডেট সময় : ০৮:০৮:১৪ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২২ অগাস্ট ২০২৪ ৬২ বার পড়া হয়েছে

এক ঘণ্টার কিছু বেশি সময়ের সে সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের অনেক প্রশ্নের জবাবই দিয়েছেন নতুন বিসিবি সভাপতি ফারুক আহমেদ। অনেক প্রশ্নের ভিড়ে কথা উঠেছিল সাকিব আল হাসানকে নিয়েও।
সাকিব প্রায় বছর দুয়েক যাবত বলগাহীন আচরণ করে আসছেন। যখন-তখন ছুটি নিয়ে চলে যাচ্ছেন বিদেশ। মন চাইলে খেলছেন, না চাইলে খেলছেন না। একটা সফর বা হোম সিরিজে হয় টেস্ট খেলছেন তো ওয়ানডে খেলছেন না। আবার কোনো সময় ওয়ানডে খেললেও টি-টোয়েন্টি খেলছেন না।
আর প্রতি সিরিজ ও সফরের আগেই প্রায় শেষ মুহূর্তে দেশে এসে নামমাত্র অনুশীলন করে বিদেশে খেলতে চলে গেছেন। যাচ্ছেন এখনও। এবার পাকিস্তান সফরেও তাই হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডায় ফ্র্যাঞ্চাইজি টি-টোয়েন্টি আসর খেলে সাকিব সরাসরি পাকিস্তান গেছেন দুই টেস্টের সিরিজ খেলতে।
সাকিব আর কতকাল এভাবে চলবেন? বিসিবি কি তাকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না? একজন ক্রিকেটার যত বড় ও বিশ্ব তারকাই হোন না কেন, তিনি তো আর দেশের ক্রিকেট এবং দেশের চেয়ে বড় নন। তাকে কি নিয়মের মধ্যে আনা যায় না? দেশের ক্রিকেট অনুরাগীদের মনে এ প্রশ্ন বহুদিন ধরেই উঁকিঝুঁকি দিচ্ছে।
বিসিবির সাবেক সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন সাকিবকে নিয়ন্ত্রণে আনতে পারেননি। কী করে আনবেন? কিছু হলে সাকিব তাকে টপকে চলে যেতেন আরও ওপরে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে। তিনিও সাকিবকে প্রশ্রয় দিয়েছেন। সাকিবকে ডেকে নিয়ে নিজ দলের এমপি পদে মনোনয়ন দিয়ে সংসদ সদস্য করেছেন।
অনেকেরই অভিযোগ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আর বিদায়ী বিসিবি প্রধান নাজমুল হাসান পাপনের আস্কারা পেয়েই সাকিব ‘ধরাকে সরা জ্ঞান’ করেছেন। কাউকে তোয়াক্কা করেননি।
এখন খুব স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠেছে, সাকিবের ব্যাপারে নতুন বোর্ড সভাপতি ফারুক আহমেদের চিন্তাভাবনা কী? আজ বুধবার বিকেলে সংবাদ সম্মেলনেও সে প্রশ্নের মুখোমুখি হলেন বিসিবির নতুন প্রধান।
সাকিব ইস্যুতে কথা বলতে গিয়ে ফারুক বুঝিয়ে দিলেন যে, এই ব্যাপারে তিনি পুরোপুরি ওয়াকিবহাল। সাকিবের এই সব হেয়ালি ও বলগাহীন নেতিবাচক আচরণ তার মোটেই ভালো লাগে না। এবং তিনি চান এর একটা সুরাহা হোক।
কদিন আগে প্রধান নির্বাচক গাজী আশরাফ হোসেন লিপু বলেছিলেন, কেউ জাতীয় দলে থাকা অবস্থায় রাজনীতি করতে পারবেন না, এটা নিয়েও সিদ্ধান্ত আসা উচিত।
সাকিব ইস্যুতে বলতে গিয়ে এবার ফারুক কথার শুরুতেই জানালেন, ‘প্রধান নির্বাচক একটা ইন্টারভিউ দিয়েছেন, যা আমার কাছে খুব ভালো লেগেছে। তাকে (সাকিবকে) যদি বোর্ড থেকে বলে দেওয়া হতো ওকে নিও না, তাহলে এটা পলিসি ম্যাটার হতো। তিনি দায়িত্বটা বোর্ডের উপর দিয়ে দিতেন। সেটা (পলিসি) যেহেতু ছিল না, সাকিব ঢুকে গেছে।’
সাকিব যেহেতু আওয়ামী লীগ সরকারের সংসদ সদস্য ছিলেন। দেশের মাটিতে তার নিরাপত্তা হুমকি রয়েছে। সেক্ষেত্রে দেশের বাইরে থেকে সাকিব সিরিজগুলো খেলতে পারবেন কিনা, সেটাও আরেক আলোচনার বিষয়।
বিসিবি সভাপতি বলেন, ‘সাকিব বাইরে থেকে খেলতে পারবে কিনা আরেকটা ব্যাপার। যেটা আমরা খুব গুরুত্বের সঙ্গে দেখবো। সাকিবের ব্যাপারটা আসলে বলেছি, বোর্ডের কিছু পলিসি থাকে। এটা আমি আমার ডিরেক্টরদের সাথে আলাপ করবো, পলিসি কী হওয়া উচিত সাকিবের ব্যাপারে। বোর্ডের সঙ্গে আলোচনা করবো সাকিব এখন কী অবস্থায় আছে, এ অবস্থায় সে কী চালিয়ে যেতে পারবে কী না। অবশ্যই ডিপেন্ড করে যে দুটি টেস্ট ম্যাচ আছে তার পরে কী হবে। তখন এটা একটা বোর্ডের পলিসি ম্যাটার হবে।’
বিসিবি প্রধান যোগ করেন, ‘খেলোয়াড়দের ব্যাপারে কিছু নিয়ম যোগ করা হবে। তারা কী করতে পারবে, কী করতে পারবে না, এটা আমি আজকেই এখানে ঢোকার আগে অনানুষ্ঠানিকভাবে আলাপ করেছি।’
বিশেষ করে সফর চলাকালীন সময়, সফরের আগে পরে ক্রিকেটারদের একটা নিয়মের মধ্যে রাখা উচিত বলে মনে করছেন ফারুক আহমেদ। তিনি বলেন, ‘আপনার যদি লিখিত থাকে, সফর চলাকালীন সময় আপনি কোনো বিজ্ঞাপন করতে পারবেন না। তাহলে এটার জন্য আপনার কাছে কেউ আসবে না। এটা যদি পরিষ্কার লেখা থাকে, তাহলে সুবিধা হবে।’
এআরবি/এমএমআর/জিকেএস