‘ডিজিটাল বাংলাদেশের প্রকৃত সুযোগ-সুবিধা দেশের জনগণ পায়নি’
- আপডেট সময় : ০৩:১১:১৪ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ৪২ বার পড়া হয়েছে
ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি উপদেষ্টা মো. নাহিদ ইসলাম বলেছেন, ডিজিটাল বাংলাদেশের প্রকৃত সুযোগ-সুবিধা দেশের জনগণ পায়নি বরং এক্ষেত্রে ব্যাপক অনিয়ম করা হয়েছে।
তিনি মন্তব্য করে বলেছেন, আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে ডাক ও টেলিযোগাযোগ এবং আইসিটি বিভাগে ৬৫ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ করেও মানুষ ‘আশানুরূপ ফল পায়নি’।
মন্ত্রণালয়ের এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সোমবার ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়ে এডিপি বাস্তবায়ন অগ্রগতি বিষয়ক পর্যালোচনা সভায় ইন্টারনেট ও তথ্যপ্রযুক্তির বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সূচকে বাংলাদেশের আগের অবস্থান তুলে ধরে তিনি এ কথা বলেন।
উপদেষ্টা বলেন, ২০১০ সাল থেকে ডিজিটাল বাংলাদেশের নামে প্রচুর অর্থ ব্যয় করে অনেক প্রকল্প নেয়া হয়েছে, কিন্তু এর ফল পায়নি দেশের মানুষ। টেলিযোগাযোগ ও আইসিটি খাতে ২০১০-২০১১ থেকে ২০২৪-২৫ অর্থবছরে ৬৫ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ করা হয়, যার মধ্যে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ ২৫ হাজার কোটি টাকা এবং ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ নিয়েছে ৪০ হাজার কোটি টাকার প্রকল্প।
তিনি বলেন, এরপরও জাতিসংঘের আন্তর্জাতিক টেলিযোগাযোগ ইউনিয়নের আইসিটি ডেভেলপমেন্ট ইনডেক্সের জুন, ২০২৪ অনুযায়ী বাংলাদেশ ১০০ মধ্যে ৬২ স্কোর করেছে। এক্ষেত্রে মিয়ানমার, শ্রীলঙ্কা, মালদ্বীপ, ভিয়েতনাম ও ভুটানের পরে বাংলাদেশের অবস্থান। ওকলা স্পিডটেস্ট গ্লোবাল ইনডেক্স মে, ২০২৪ এর ইন্টারনেট গতির তালিকায় ১৪৭ দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ১০৯তম। এক্ষেত্রে কেনিয়াও বাংলাদেশের চেয়ে এগিয়ে। পাশাপাশি ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সূচকেও বাংলাদেশ অবস্থান ১০৮; তালিকায় থাকা দেশগুলোর মধ্যে ভারত, শ্রীলঙ্কা, ভুটান, রুয়ান্ডা, ঘানাও বাংলাদেশের উপরে।
ডাক ও টেলিযোগাযোগ উপদেষ্টাকে উদ্ধৃত করে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, আইএমএফের কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রস্তুতি সূচকে জুন, ২০২৪-এ ১৭৪ দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ১১৩তম, তালিকায় থাকা দেশগুলোর মধ্যে ভারত, শ্রীলঙ্কা, ভুটান, রুয়ান্ডা, ঘানাও বাংলাদেশের চেয়ে এগিয়ে। সাইবার নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠান সার্ফশার্ক ডিজিটাল কোয়ালিটি অব লাইফ ইনডেক্স ২০২৩ এর ডিজিটাল জীবনমান সূচকে বিশ্বের ১২১ দেশের তালিকায় বাংলাদেশের অবস্থান ৮২তম, এক্ষেত্রে আগের বছর হচ্ছে বাংলাদেশ পিছিয়েছে পাঁচ ধাপ।
‘সূচক অনুযায়ী বাংলাদেশে ইন্টারনেটের গতি বৈশ্বিক গড়ের চেয়ে ৫% কম। কি গভর্মেন্ট সূচকে বাংলাদেশ তালিকার ৭৩-এ, যা বৈশ্বিক গড়মানের নিচে; ই-সিকিউরিটি র্যাংকিংয়ে ৮৫তম স্থানে এবং ইন্টারনেট ক্রয় ক্ষমতার হিসেবে ৭৭তম অবস্থানে। মার্কিন সাময়িকী সিইও ওয়ার্ল্ডের এপ্রিল ২০২৪ এর প্রতিবেদন অনুযায়ী, ফ্রিল্যান্সিংয়েও পিছিয়ে বাংলাদেশ। সেরা গন্তব্যের ৩০ দেশের তালিকায় বাংলাদেশের অবস্থান ২৯ নম্বরে। তালিকায় ভারত, পাকিস্তানের পর বাংলাদেশের অবস্থান।’
নাহিদ ইসলাম বলেন, এসব সূচক দেখলে প্রতীয়মান হয়, ডিজিটাল বাংলাদেশের প্রকৃত সুযোগ-সুবিধা দেশের জনগণ পায়নি বরং এক্ষেত্রে ব্যাপক অনিয়ম করা হয়েছে।
ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের চারটি দপ্তরে ২০২৪-২৫ অর্থবছরে মোট নয়টি প্রকল্প নেওয়ার কথা জানানো হয়েছে সভায়। এর মধ্যে বিটিসিএল পাঁচটি, টেলিটক বাংলাদেশ লিমিটেড একটি, ডাক অধিদপ্তর দুটি এবং বাংলাদেশ সাবমেরিন ক্যাবল পিএলসি একটি প্রকল্প গ্রহণ করে।
বাংলাদেশ জার্নাল/এমপি