বাকেরগঞ্জ নিয়ামতি টিসিবির পণ্য বিক্রিতে অনিয়ম, মাঠে নেই ট্যাগ কর্মকর্তা

0
159

জিয়াউল হক, বাকেরগঞ্জ, বরিশাল। বরিশাল জেলার বাকেরগঞ্জ উপজেলায় ট্রেডিং কর্পোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) পণ্য বিক্রি ও বিতরণে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। কোনো প্রকার প্রচার ছাড়াই নিয়ামতি ইউনিয়ন পরিষদের ভবনে বসে বিতরণের ফলে অনেকেই পাচ্ছেন না এমন অভিযোগ দীর্ঘদিনের। আবার অনেকেই হয়রানির শিকার হচ্ছেন।

এ ছাড়া যোগসাজসে ও কৌশলে অনেক কার্ডধারী গ্রাহকদের কাছে পণ্য বিক্রি না করে পরবর্তী সময়ে সেই পণ্য উচ্চমূল্যে দোকানিদের কাছে বিক্রির অভিযোগ উঠেছে। টিসিবি পণ্য বিক্রির দায়িত্বপ্রাপ্ত তদারকি (ট্যাগ) অফিসারের উপস্থিতিতে পণ্য বিক্রয়ের বিধান থাকলেও নিয়ামতি ইউনিয়ন পরিষদে টিসিবি পন্য বিক্রি ও বিতরণের সময় ট্যাগ অফিসার উপস্থিত দেখা যায়নি। দীর্ঘদিনের গুরুতর অভিযোগ রয়েছে স্থানীয় ইউপি সদস্যদের কর্মী, আত্মীয়-স্বজনদের পরিবারের মধ্যে টিসিবির কার্ড ছাড়াই পণ্য বিক্রয় করা হচ্ছে।

২৪ সেপ্টেম্বর বিকেল ৩ টায় সরেজমিনে দেখা যায়, নিয়ামতি ইউনিয়ন পরিষদে টিসিবির চালের বস্তা গুলো খুলে একটি প্লাস্টিকের বালতি দ্বারা অনুমান করে গ্রাহকদের চাল দেয়া হচ্ছে। প্রতি গ্রাহকের মাঝে ৪৮০ টাকার বিনিময়ে ৫ কেজি চাল ২ কেজি মুশুরি ডাল ও ২ লিটার ভোজ্য তেল দেয়ার কথা। কিন্তু বাস্তব চিত্র ভিন্ন পাঁচ কেজি চাল পরিমাপ ছাড়া দেয়ায় অনেকেই পাচ্ছেন সাড়ে ৪ কেজি আবার অনেকে পাচ্ছেন ৪ কেজি ৬০০ গ্রাম ৭০০ গ্রাম।

নিয়ামতি ইউনিয়নে টিসিবি পণ্যের কার্ড রয়েছে ১২ শত ৬০ টি সে হিসেবে এক একটি কার্ডে যে পরিমান চাল কম দেয়া হচ্ছে। এই ভাবে পরিমাপ ছাড়া যদি ১২ শত ৬০ কার্ডে চাল কম দেয়া হয় তাহলে প্রায় ৬ শত থেকে ৭ শত কেজি চাল গ্রাহকদের কম দেওয়া হবে। আর এই সুযোগে উপজেলা প্রশাসনের তদারকির অভাবে নিম্ন আয়ের মানুষের সুবিধার জন্য সরকারের দেয়া টিসিবি পন্য ডিলাররা এখন কালোবাজারে বিক্রি করার সুযোগ পাচ্ছে। নিয়ামতি ইউনিয়নের টিসিবি পণ্যের ঠিকাদার সবুজ চাল পরিমাপের কমের বিষয়ে বলেন, চালের গোডাউন থেকেই বস্তায় চাল কম আসছে।

এই ঘাটতি আমরা পূরণ করব কীভাবে। তাই আমরা কিছুটা কম দিচ্ছি। ট্যাগ অফিসার কেন উপস্থিত ছিল না এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ট্যাগ অফিসার কে ফোন করা হয়েছে তিনি অফিসের কাজে ব্যস্ত আছেন তাই আসতে পারেনি। নিয়ামতি ইউনিয়নের দায়িত্বপ্রাপ্ত ট্যাগ অফিসার উপজেলা দারিদ্র্য বিমোচন কর্মকর্তা হুমায়ুন কবির বলেন, ডিগ্রি পরীক্ষার হলে আমার ডিউটি ছিল তাই নিয়ামতি টিসিবি পণ্যের ডিলার পয়েন্টে যেতে পারিনি। চাল পরিমাপের কম দেওয়ার বিষয়ে তার কাছে জানতে চাইলে তিনি কথা অন্য প্রসঙ্গে ঘুরিয়ে নিয়ে যায়। এবং সঠিক কোন জবাব দিতে পারেননি।

নিয়ামতি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হুমায়ুন কবির বলেন, পরিষদে টিসিবি পণ্যের ডিলার মালামাল নিয়ে আসছে আমার দায়িত্ব সঠিকভাবে মালামাল আসছে কিনা পরিষদে সেটা দেখে স্বাক্ষর প্রদান করা। আমি নিজেও বলেছি টিসিবির পণ্য বিক্রয়ের সময় ডিলার যেন ট্যাগ অফিসারের উপস্থিতিতে বিক্রয় করেন।

কিন্তু ডিলার সবুজ ট্যাগ অফিসার ছাড়াই পণ্য বিক্রয় করেছেন। এ বিষয়ে বাকেরগঞ্জ উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সজল চন্দ্র শীল বলেন, মাইকিং করেই পিসিবি পণ্য বিক্রয়ের কথা। আর টিসিবি পণ্য পরিমাপে কম দেওয়ার কোন সুযোগ নেই। টিসিবির পণ্য অন্য কোথাও বিক্রির সুযোগও নেই। যদি কেউ পরিমাপে কম দিয়ে থাকেন তাহলে অবশ্যই আমি বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেব।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here