সিলেট প্রতিনিধি:
সিলেট-৬ (গোলাপগঞ্জ-বিয়ানীবাজার) আসনে আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে সম্ভাব্য প্রার্থীদের তৎপরতা দিন দিন বেড়ে চলেছে। প্রবাসী অধ্যুষিত এই আসনে বিএনপির প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী হয়ে উঠেছে একসময়ের জোটসঙ্গী বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। তবে মাঠপর্যায়ের তৎপরতা, সাংগঠনিক অবস্থান এবং জনপ্রিয়তার দিক থেকে বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থী ফয়সল আহমদ চৌধুরী বর্তমানে এগিয়ে আছেন বলে স্থানীয় সূত্র জানিয়েছে।

আসনটিতে বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশী রয়েছেন নয়জন। তাদের মধ্যে সবচেয়ে সক্রিয়, জনসম্পৃক্ত ও জনপ্রিয় মুখ ফয়সল আহমদ চৌধুরী। তিনি একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ধানের শীষ প্রতীকে অংশ নিয়ে তৎকালীন শিক্ষামন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ নেতা নুরুল ইসলাম নাহিদের বিপক্ষে এক লাখের বেশি ভোট পেয়েছিলেন। বিতর্কিত সেই “রাতের ভোটের” নির্বাচনে হেরে গেলেও এলাকায় গ্রহণযোগ্যতা ধরে রাখেন তিনি। বর্তমানে তিনি নিয়মিত জনসংযোগ ও তৃণমূল যোগাযোগে ব্যস্ত সময় পার করছেন।

বিএনপির অন্যান্য সম্ভাব্য প্রার্থীদের মধ্যে রয়েছেন কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য আবুল কাহের চৌধুরী শামীম, জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট এমরান আহমদ চৌধুরী, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ড. এনামুল হক চৌধুরী, আন্তর্জাতিক বিষয়ক উপদেষ্টা অহিদ আহমদ, যুক্তরাজ্য বিএনপির সাবেক সভাপতি মরহুম কমর উদ্দিনের মেয়ে সাবিনা খান, সাবেক এমপি ড. সৈয়দ মকবুল হোসেন লেচু মিয়ার মেয়ে সৈয়দা আদিবা হোসেন, জেলা বিএনপির সহ-শিল্প ও বাণিজ্য সম্পাদক তামিম ইয়াহইয়া এবং জাসাস আহ্বায়ক হেলাল খান।

অন্যদিকে জামায়াতে ইসলামী ইতোমধ্যে ঢাকা মহানগর উত্তর আমির মুহাম্মদ সেলিম উদ্দিনকে মনোনয়ন দিয়েছে। তিনি এলাকায় নিয়মিত অবস্থান করে দলের সাংগঠনিক ভিত্তি শক্তিশালী করার চেষ্টা করছেন। তবে ঢাকায় দীর্ঘ রাজনৈতিক কর্মজীবনের কারণে স্থানীয়দের কাছে তিনি এখনও কিছুটা অপরিচিত।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এ আসনে ইসলামী ঐক্যজোট, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম, খেলাফত মজলিস ও ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ থেকেও প্রার্থী হতে পারে। এতে বিরোধী ভোট বিভাজনের কারণে বিএনপির প্রার্থী ফয়সল আহমদ চৌধুরীর পক্ষে অনুকূল পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে।

অতীত নির্বাচনী ইতিহাস অনুযায়ী, সিলেট-৬ আসনে আওয়ামী লীগ ছয়বার, বিএনপি ও জাতীয় পার্টি দু’বার করে এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী দু’বার জয়ী হয়েছেন। স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে জয়ী হওয়া ড. সৈয়দ মকবুল হোসেন পরে বিএনপিতে যোগ দেন। ২০০১ ও ২০০৮ সালের নির্বাচনে জোটগত সমঝোতায় আসনটি জামায়াতের জন্য ছেড়ে দেওয়া হলেও দলটির প্রার্থী জয়ী হতে পারেননি।

স্থানীয়দের মতে, ফয়সল আহমদ চৌধুরী শুধু রাজনীতিকই নন, তিনি একজন সফল শিল্প উদ্যোক্তা এবং মানবিক সমাজকর্মী। বন্যা, দুর্যোগ ও সামাজিক উদ্যোগে তার সক্রিয় উপস্থিতি জনগণের আস্থা অর্জন করেছে। বিএনপির স্থানীয় নেতাকর্মীরাও মনে করেন, ফয়সল আহমদ চৌধুরী মনোনয়ন পেলে ধানের শীষের জয় প্রায় নিশ্চিত।

বিএনপির সিনিয়র নেতা সালেহ আহমদ খসরু বলেন, “ফয়সল আহমদ চৌধুরী নিঃসন্দেহে একজন গ্রহণযোগ্য ও যোগ্য প্রার্থী। দল যদি তাকে মনোনয়ন দেয়, তাহলে সিলেট-৬ আসনে বিএনপি জয়ের কাছাকাছি থাকবে।”