স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নীতিমালা ভঙ্গ করে চলছে চিকিৎসা কার্যক্রম, ক্ষোভ স্থানীয়দের
হরিরামপুরে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের বিধিমালা অমান্য করে চলছে চিকিৎসা: ডাঃ রিজওয়ান বিশ্বাসের বিরুদ্ধে গুরুতর অনিয়মের অভিযোগ

- আপডেট সময় : ০২:১০:২৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ৬ অক্টোবর ২০২৫ ১০২ বার পড়া হয়েছে

হরিরামপুর (মানিকগঞ্জ) প্রতিনিধি:
মানিকগঞ্জের হরিরামপুর উপজেলার ঝিটকা বাজারে এম.বি.বি.এস (পি.জি.টি মেডিসিন) ও ডি.এম.ইউ (অন কোর্স) ডিগ্রি প্রাপ্ত ডাঃ রিজওয়ান বিশ্বাসের বিরুদ্ধে গুরুতর অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। ভুক্তভোগী ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, তিনি সাধারণ ঠান্ডা, জ্বর বা কাশি-এর রোগীদের অপ্রয়োজনীয়ভাবে এন্টিবায়োটিক, স্টেরয়েড ও ডাইক্লোফেনাক জাতীয় ওষুধ দিচ্ছেন—যা শিশুদের জন্য মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকিপূর্ণ।
স্থানীয়রা অভিযোগ করে বলেন, ডাঃ রিজওয়ান বিশ্বাস রোগী দেখার সময় কোনো পরীক্ষা-নিরীক্ষা বা শারীরিক পর্যবেক্ষণ ছাড়াই প্রেসক্রিপশন লিখে দেন। শিশু থেকে শুরু করে বয়স্ক—সব রোগীকেই প্রায় একই ধরনের ওষুধ দিয়ে থাকেন তিনি।
বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা সতর্ক করে বলেন, অপ্রয়োজনীয় এন্টিবায়োটিক ব্যবহার এন্টিবায়োটিক রেসিস্ট্যান্স তৈরি করে, যা ভবিষ্যতে সাধারণ রোগকেও জটিল অবস্থায় নিয়ে যেতে পারে। এতে মৃত্যু ঝুঁকি বাড়ে, ওজন অস্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধি পায়, এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা নষ্ট হয়।
আরও উদ্বেগজনক বিষয় হলো, শিশুদের দ্রুত সারানোর নামে স্টেরয়েড প্রয়োগ করা হচ্ছে, যা শিশুদের হাড় দুর্বলতা, কিডনি ও লিভারের জটিলতা এমনকি পঙ্গুত্বের ঝুঁকি তৈরি করছে।
এক ভুক্তভোগী অভিভাবক বলেন, “ডাঃ রিজওয়ান মাত্র ১০০ টাকা ভিজিট নেন, কিন্তু এমন ওষুধ দেন যা না খেলে আমার বাচ্চা এখন আর সুস্থ থাকে না।”
মানিকগঞ্জ মেডিকেল কলেজের এক শিশু বিশেষজ্ঞ জানান, “অপ্রয়োজনীয় ওষুধ ব্যবহারে শিশুদের ভবিষ্যৎ ধ্বংস হচ্ছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কঠোর নজরদারি প্রয়োজন।”
অভিযুক্ত ডাঃ রিজওয়ান বিশ্বাস অবশ্য অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, “আমার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। আমি নিয়ম মেনে চিকিৎসা প্রদান করি।”
হরিরামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডাঃ এ.কে.এম কাজী রাসেল বলেন, “স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের বিধিমালা অমান্য করে চিকিৎসা দেওয়া বেআইনি। তবে এমবিবিএস ডাক্তারদের অবশ্যই পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে চিকিৎসা প্রদান করতে হয়।”
এ বিষয়ে জেলা সিভিল সার্জন অফিস জানায়, “আমরা বিষয়টি তদন্ত করছি। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নীতিমালার বাইরে কোনো চিকিৎসা সেবা প্রদান আইনত দণ্ডনীয়।”
স্থানীয় সচেতন মহল দ্রুত স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হস্তক্ষেপ দাবি করেছে, যাতে শিশু ও সাধারণ রোগীদের জীবনের ঝুঁকি কমে এবং চিকিৎসা সেবা সুষ্ঠু হয়।