আউশ ধান চাষে কৃষকের সাফল্য, খাদ্য নিরাপত্তা ও গ্রামীণ সংস্কৃতির মিলনমেলা
হরিরামপুর চরাঞ্চলে আউশ ধানের খাদ্য উৎসব ২০২৫: প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলায় কৃষকের নিরাপদ খাদ্য উদ্যোগ

- আপডেট সময় : ০৯:৫০:২৫ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ১০০ বার পড়া হয়েছে

মানিকগঞ্জ প্রতিনিধি । তারিখ: ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫
মানিকগঞ্জ জেলার হরিরামপুর উপজেলার লেছড়াগঞ্জ ইউনিয়নের চরাঞ্চলে আউশ ধানকে কেন্দ্র করে অনুষ্ঠিত হলো “আউশ ধানের খাদ্য উৎসব ২০২৫”। নটাখোলা কৃষি প্রতিবেশবিদ্যা শিখন কেন্দ্রে কৃষক এরশাদ মুন্সীর বাড়িতে আয়োজিত এ উৎসব প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলা, নিরাপদ খাদ্য উৎপাদন এবং কৃষক পর্যায়ে আউশ ধানের সম্প্রসারণের ওপর গুরুত্বারোপ করে।
বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান বারসিকের সহযোগিতায় নটাখোলা কৃষি প্রতিবেশ শিখন কেন্দ্র, শতবাড়ির কৃষক ও স্থানীয় যুব সংগঠনের যৌথ উদ্যোগে এই উৎসব অনুষ্ঠিত হয়। কৃষক, শিক্ষক, শিক্ষার্থী, নারী সংগঠনের সদস্য, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি সহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ অংশ নেন।
আলোচনা সভায় আউশ ধানের বীজ সংরক্ষণ, পরিচর্যা, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ও এ ধান দিয়ে তৈরি নানা সুস্বাদু খাবারের বিষয়ে কৃষকদের অভিজ্ঞতা শেয়ার করা হয়। বক্তব্য রাখেন কৃষক এরশাদ মুন্সী, নারী উন্নয়ন সংগঠনের সভাপতি আকলিমা বেগম, যুবটিমের সদস্য জুয়েল রানা ও বারসিক প্রোগ্রাম অফিসার মুকতার হোসেন।
স্থানীয় কৃষকদের ভাষ্যমতে, চলতি মৌসুমে হরিরামপুর চরাঞ্চলের নটাখোলা, পাটগ্রামচর, বালিয়াচক, জয়পুর, সেলিমপুর, ভগমানচর, বসন্তপুরসহ লেছড়াগঞ্জ, সুতালড়ী ও আজিমনগর ইউনিয়নে ব্যাপক আউশ ধান চাষ হয়েছে। উপজেলা কৃষি অফিস জানায়, শুধু লেছড়াগঞ্জ ইউনিয়নেই এ বছর এক হাজার হেক্টরেরও বেশি জমিতে আউশ ধান চাষ হয়েছে।
কৃষক ফারুক শিকদার জানান, তিনি ১০ বিঘা জমিতে স্থানীয় জাতের আউশ ধান চাষ করেছেন। আউশ ধান চাষে কম খরচ হয়, তাছাড়া কোনো রাসায়নিক সার বা কীটনাশক ব্যবহার করতে হয় না। প্রতি বিঘায় ৮-৯ মণ পর্যন্ত ফলন হয়। এতে চরাঞ্চলের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত হয় এবং কৃষকরা সারা বছরের চাহিদা মেটাতে সক্ষম হন।
নারী কৃষক আকলিমা বেগম বলেন, “আউশ ধান শুধু নিরাপদ খাদ্যই নয়, এটি আমাদের সংস্কৃতির অংশ। এ ধান দিয়ে আমরা পিঠা, মুড়ি, খই, চিড়া ও পায়েস তৈরি করি। জামাই আপ্যায়নেও আউশ ধানের পিঠার বিশেষ স্থান রয়েছে।”
উৎসবে কৃষক ও বিশেষজ্ঞরা আশা প্রকাশ করেন, ভবিষ্যতে আউশ ধানের চাষ আরও সম্প্রসারিত হবে এবং এটি জলবায়ু পরিবর্তনজনিত চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় একটি কার্যকর সমাধান হয়ে উঠবে।