ঢাকা ০৬:০৮ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ০৯ জুলাই ২০২৫, ২৫ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞপ্তি/নোটিশ ::
সারাদেশে প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে... আগ্রহীরা সিভি মেইল করুন:  career@bdnewspost.com  ||   সারাদেশে প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে... আগ্রহীরা সিভি মেইল করুন:  career@bdnewspost.com  ||   সারাদেশে প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে... আগ্রহীরা সিভি মেইল করুন:  career@bdnewspost.com  ||   সারাদেশে প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে... আগ্রহীরা সিভি মেইল করুন:  career@bdnewspost.com  ||   সারাদেশে প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে... আগ্রহীরা সিভি মেইল করুন:  career@bdnewspost.com  ||   সারাদেশে প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে... আগ্রহীরা সিভি মেইল করুন:  career@bdnewspost.com  ||   সারাদেশে প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে... আগ্রহীরা সিভি মেইল করুন:  career@bdnewspost.com  ||   সারাদেশে প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে... আগ্রহীরা সিভি মেইল করুন:  career@bdnewspost.com  ||
সদ্য প্রাপ্ত খবর ::
মুন্সিগঞ্জ জেলা প্রশাসকের কার্যালয় নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি Munshiganj DC Place of work Activity Round 2025 bdnewspost.com বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশন বিসিক নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি BSCIC Process Round 2025 bdnewspost.com নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসকের কার্যালয় নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি Narayanganj DC Place of job Task Round 2025 bdnewspost.com এইচএসসি ইংরেজি ২য় পত্র প্রশ্ন সমাধান ২০২৪ (সকল বোর্ড) bdnewspost.com ভর্তি চলছেঃ BUBT-এর অর্থনীতি প্রোগ্রামের মাধ্যমে আপনার ভবিষ্যৎ উন্মোচন করুন! bdnewspost.com আলিম বাংলা ২য় পত্র পরীক্ষার প্রশ্ন ও সমাধান ২০২৪ PDF bdnewspost.com Alim Bangla 2d Paper Query answer 2025 – Alim Bangla 2d Paper Query Solution 2025 PDF Obtain bdnewspost.com আলিম বাংলা ২য় পত্র পরীক্ষার প্রশ্ন ও সমাধান ২০২৫ PDF bdnewspost.com HSC English 2d Paper Query Solution 2025 – HSC English 2d Paper Query resolution 2025 PDF All Board bdnewspost.com এইচএসসি ইংরেজি ২য় পত্র প্রশ্ন সমাধান ২০২৫ (সকল বোর্ড) bdnewspost.com

রংপুরে আকস্মিক বন্যায় লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ১১:১৫:১৫ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১৭৯ বার পড়া হয়েছে


উজানের পাহাড়ি ঢল আর কয়েকদিনের টানা বৃষ্টিতে রংপুর অঞ্চলের নদ-নদীর পানি বেড়েছে। এতে দেখা দিয়েছে আকস্মিক বন্যা। রংপুর, লালমনিরহাট, কুড়িগ্রাম, নীলফামারী ও গাইবান্ধা জেলার নদ-নদীর কূলঘেঁষা চর ও চরদ্বীপসহ লোকালয়ের লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। রাস্তাঘাট ডুবে যোগাযোগবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে অনেক এলাকা। এ ছাড়া ভাঙন-আতঙ্কে দিন পার করছেন নদীপাড়ের হাজারও মানুষ।

জানা গেছে, তিস্তা নদীবেষ্টিত গংগাচড়া উপজেলার লক্ষ্মীটারী, কোলকোন্দ, গজঘণ্টা, আলমবিদির, নোহালী, কাউনিয়া উপজেলার বালাপাড়া, মধুপুর, হারাগাছ, ঢুসমারা, শহীদবাগের গান্নার চর, পীরগাছা উপজেলার ছাওলা ও পাওটানার প্রায় ৫০টি গ্রামের ৩০ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। এসব এলাকার বিভিন্ন জায়গায় গ্রামীণ রাস্তাঘাট তলিয়ে গেছে। বন্যার আতঙ্কে নদী তীরবর্তী নিম্নাঞ্চলের মানুষের নির্ঘুম রাত কেটেছে। এমন আকস্মিক বন্যায় চরম দুর্ভোগে পড়ছে বানভাসিরা। এই নিয়ে অষ্টমবারের মতো বন্যার কবলে পড়ল তিস্তাপাড়ের মানুষ।

তিস্তা নদীর কাউনিয়া পয়েন্টে রোববার সকাল থেকেই বিপৎসীমার ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। এ উপজেলায় টানা বৃষ্টি আর উজানের ঢলে ভয়ংকর রূপ ধারণ করেছে তিস্তা। পানি বৃদ্ধি পাওয়ার সাথে সাথে উঠতি আমন ধান ও বিভিন্ন সবজিখেত ডুবে আছে বন্যার পানিতে। দীর্ঘ সময় ডুবে থাকলে এসব ফসলের মারাত্মক ক্ষতির শঙ্কা করছেন চাষিরা।

এদিকে রোববার দুপুরে ভাঙনকবলিত এলাকায় কাউনিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. মহিদুল হক, জেলা ত্রাণ কর্মকর্তা মোতাহার হোসেন, প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. আহসান হাবীব সরকারসহ স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানরা পরিদর্শন করেছেন।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মহিদুল হক বলেন, তিস্তা নদী এলাকায় বন্যা ও ভাঙনের বিষয়ে আমরা সার্বক্ষণিক খোঁজখবর রাখছি। কোথাও কোনো সমস্যা হলে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেয়া হবে। ইতোমধ্যে ভাঙনকবলিত ১০টি পারিবারকে শুকনা খাবার বিতরণ করা হয়েছে। ত্রাণের পর্যাপ্ত ব্যবস্থা রয়েছে। উপজেলা প্রশাসন ও ত্রাণ বিভাগ বন্যা মোকাবিলায় প্রস্তুত রয়েছে।

গংগাচড়া উপজেলার ইউপি সদস্য মনোয়ারুল ইসলাম বলেন, গত কয়েক দিন থেকে যে বন্যা ও পানির আশঙ্কা করা হয়েছিল তাই হয়েছে। এ বিষয়ে প্রশাসনের খুব বেশি তৎপরতা লক্ষ্য করা যায়নি। হয়তো এখন আসবে, খোঁজখবর নেবে। আমরা জনপ্রতিনিধি হিসেবে কী করতে পারি, প্রশাসন বরাদ্দ দিলে তখন আমরা বানভাসি মানুষের পাশে দাঁড়াতে পারি।

পানি উন্নয়ন বোর্ড বলছে, দুপুরের দিকে পানি সামান্য কমলেও সন্ধ্যা থেকে তিস্তার পানি আবারও বাড়ছে। তাই চরাঞ্চলবাসীকে সর্তক থাকতে বলা হয়েছে। বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে নিয়ে ইতোমধ্যে পানি উন্নয়ন বোর্ডের সবার ছুটি বাতিল করা হয়েছে। সবাই এখন যে যার স্থানে দায়িত্ব, সেই স্থানে দায়িত্ব পালন করছেন বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা।

পানি উন্নয়ন বোর্ড রংপুরের নির্বাহী প্রকৌশলী রবিউল ইসলাম জানান, তিস্তার কাউনিয়া পয়েন্টে বিপৎসীমার উপর দিয়ে পানি প্রবাহ হচ্ছে। যা রাতে আরও বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তাছাড়া পানি বাড়ায় তিস্তা-সংলগ্ন নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। বিষয়গুলো নিয়ে সবসময় মনিটরিং করা হচ্ছে। যাতে রাস্তা ঘাট, ব্রিজ ভেঙে না যায় সেই বিষয়গুলো মাথায় রেখে কাজ করা হচ্ছে।

লালমনিরহাটে বন্যা পরিস্থিতি: লালমনিরহাটে এ বন্যায় পানিবন্দি হয়ে পড়েছে প্রায় ২৫ হাজার পরিবার। তিস্তার ডালিয়া পয়েন্টে পানির প্রবাহ বিপৎসীমার কাছাকাছি থাকায় আতংকিত হয়ে পড়ছে এখানকার মানুষেরা। নদী তীরবর্তী এলাকার বেশ কিছু রাস্তাঘাট ব্রিজ কালভার্ট পানির তোড়ে ভেঙে গেছে। আমন ধান ও বিভিন্ন সবজি ক্ষেত ডুবে আছে পানিতে। দীর্ঘ সময় ডুবে থাকলে এসব ফসলের মারাত্মক ক্ষতির শঙ্কা করছেন চাষিরা। একই সাথে বন্যার পানির তোড়ে ভেসে গেছে বেশ কিছু পুকুরের মাছ।

লালমনিরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী শুনিল কুমার বলেন, রোববার সকাল ৬টায় তিস্তা নদী ডালিয়া পয়েন্টে পানিপ্রবাহ বেড়ে বিপৎসীমার ২ সেন্টিমিটার ওপর প্রবাহিত হয়। দুপুরে তা কমে গিয়ে বিপৎসীমার নিচে নেমে আসে। আশা করছি দ্রুতই বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি ঘটবে।

লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক এইচ এম রকিব হায়দার বলেন, বন্যাকবলিতদের জন্য ১৩ লাখ টাকা ও ৯০ মেট্রিকটন জিআর চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। আজকে স্বল্প পরিসরে বিতরণ শুরু করেছি। সোমবার সকলের কাছে পৌঁছে যাবে ত্রাণ। বন্যা বাড়লে তা মোকাবিলা করতে জেলা উপজেলা প্রশাসন আমরা প্রস্তুত রয়েছি।

কুড়িগ্রামে বাড়ছে ভাঙন আতঙ্ক: কুড়িগ্রামে ধরলাসহ অন্যান্য নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। প্লাবিত হয়েছে তিস্তার তীরবর্তী রাজারহাট উপজেলার ঘড়িয়ালডাঙ্গা, বিদ্যানন্দ, উলিপুর উপজেলার দলদলিয়া, বজরা, থেতরাই, গুনাইগাছ এবং চিলমারী উপজেলার রমনা মডেল ইউনিয়নের আংশিক অংশ। এসব ইউনিয়নের চর ও নিম্নাঞ্চলের প্রায় ৪ শতাধিক পরিবার, গ্রামীণ কাঁচা সড়কসহ ১৫৯ হেক্টর জমির রোপা আমন এবং মৌসুমি ফসলের খেত নিমজ্জিত হয়ে পড়েছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ড বিভাগ জানায়, ধরলা, দুধকুমার ও ব্রহ্মপুত্র নদের পানি বিভিন্ন পয়েন্টে বৃদ্ধি পেলেও তা বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পানি কমার সম্ভাবনা রয়েছে।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার খাদিজা বেগম বলেন, এ উপজেলায় বন্যা হতে পারে তাই আগাম প্রস্তুতি গ্রহণ করে চরাঞ্চলের মানুষজনকে নিরাপদ স্থানে ও আশ্রয় কেন্দ্রে যাওয়ার পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। এ ছাড়া পানিবন্দিদের মাঝে শুকনা খাবার বিতরণ করা হচ্ছে।

গাইবান্ধার বন্যা পরিস্থিতি: গাইবান্ধা জেলার ১৬৫টি চরের নিম্নাঞ্চলে পানি উঠতে শুরু করেছে। তিস্তার পানি কাউনিয়া পয়েন্টে বিপৎসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হলেও গাইবান্ধার প্রধান তিন নদ-নদীর পানি বিপৎসীমার অনেক নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। আপাতত জেলায় বন্যার আশঙ্কা নেই বলে জানিয়েছে পাউবো।

গাইবান্ধা পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) উপ সহকারী প্রকৌশলী রায়হানুল ইসলাম বলেন, উজান থেকে পানি আসছে এবং গত কয়েকদিনের বৃষ্টির পানিতে জেলার সব নদ-নদীর পানি বাড়তে শুরু করেছে। চরের কিছু নিচু অঞ্চলে পানি প্রবেশ করেছে। তিস্তার পানি বৃদ্ধি পেলেও করতোয়া, ঘাঘট ও ব্রহ্মপুত্র নদের পানি বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। আপাতত এ পানিতে বন্যার আশঙ্কা নেই। আমরা সার্বক্ষণিক নজর রাখছি।

গাইবান্ধা জেলা প্রশাসক চৌধুরী মোয়াজ্জম আহমদ বলেন, সুন্দরগঞ্জ উপজেলার দুই একটি পয়েন্টে পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। করতোয়া, ঘাঘট, ব্রহ্মপুত্র নদের পানি বিপদসীমার অনেক নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। জেলা প্রশাসকের পক্ষ থেকে সবধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।

বাংলাদেশ জার্নাল/আরএইচ




নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য

রংপুরে আকস্মিক বন্যায় লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি

আপডেট সময় : ১১:১৫:১৫ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৪


উজানের পাহাড়ি ঢল আর কয়েকদিনের টানা বৃষ্টিতে রংপুর অঞ্চলের নদ-নদীর পানি বেড়েছে। এতে দেখা দিয়েছে আকস্মিক বন্যা। রংপুর, লালমনিরহাট, কুড়িগ্রাম, নীলফামারী ও গাইবান্ধা জেলার নদ-নদীর কূলঘেঁষা চর ও চরদ্বীপসহ লোকালয়ের লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। রাস্তাঘাট ডুবে যোগাযোগবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে অনেক এলাকা। এ ছাড়া ভাঙন-আতঙ্কে দিন পার করছেন নদীপাড়ের হাজারও মানুষ।

জানা গেছে, তিস্তা নদীবেষ্টিত গংগাচড়া উপজেলার লক্ষ্মীটারী, কোলকোন্দ, গজঘণ্টা, আলমবিদির, নোহালী, কাউনিয়া উপজেলার বালাপাড়া, মধুপুর, হারাগাছ, ঢুসমারা, শহীদবাগের গান্নার চর, পীরগাছা উপজেলার ছাওলা ও পাওটানার প্রায় ৫০টি গ্রামের ৩০ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। এসব এলাকার বিভিন্ন জায়গায় গ্রামীণ রাস্তাঘাট তলিয়ে গেছে। বন্যার আতঙ্কে নদী তীরবর্তী নিম্নাঞ্চলের মানুষের নির্ঘুম রাত কেটেছে। এমন আকস্মিক বন্যায় চরম দুর্ভোগে পড়ছে বানভাসিরা। এই নিয়ে অষ্টমবারের মতো বন্যার কবলে পড়ল তিস্তাপাড়ের মানুষ।

তিস্তা নদীর কাউনিয়া পয়েন্টে রোববার সকাল থেকেই বিপৎসীমার ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। এ উপজেলায় টানা বৃষ্টি আর উজানের ঢলে ভয়ংকর রূপ ধারণ করেছে তিস্তা। পানি বৃদ্ধি পাওয়ার সাথে সাথে উঠতি আমন ধান ও বিভিন্ন সবজিখেত ডুবে আছে বন্যার পানিতে। দীর্ঘ সময় ডুবে থাকলে এসব ফসলের মারাত্মক ক্ষতির শঙ্কা করছেন চাষিরা।

এদিকে রোববার দুপুরে ভাঙনকবলিত এলাকায় কাউনিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. মহিদুল হক, জেলা ত্রাণ কর্মকর্তা মোতাহার হোসেন, প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. আহসান হাবীব সরকারসহ স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানরা পরিদর্শন করেছেন।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মহিদুল হক বলেন, তিস্তা নদী এলাকায় বন্যা ও ভাঙনের বিষয়ে আমরা সার্বক্ষণিক খোঁজখবর রাখছি। কোথাও কোনো সমস্যা হলে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেয়া হবে। ইতোমধ্যে ভাঙনকবলিত ১০টি পারিবারকে শুকনা খাবার বিতরণ করা হয়েছে। ত্রাণের পর্যাপ্ত ব্যবস্থা রয়েছে। উপজেলা প্রশাসন ও ত্রাণ বিভাগ বন্যা মোকাবিলায় প্রস্তুত রয়েছে।

গংগাচড়া উপজেলার ইউপি সদস্য মনোয়ারুল ইসলাম বলেন, গত কয়েক দিন থেকে যে বন্যা ও পানির আশঙ্কা করা হয়েছিল তাই হয়েছে। এ বিষয়ে প্রশাসনের খুব বেশি তৎপরতা লক্ষ্য করা যায়নি। হয়তো এখন আসবে, খোঁজখবর নেবে। আমরা জনপ্রতিনিধি হিসেবে কী করতে পারি, প্রশাসন বরাদ্দ দিলে তখন আমরা বানভাসি মানুষের পাশে দাঁড়াতে পারি।

পানি উন্নয়ন বোর্ড বলছে, দুপুরের দিকে পানি সামান্য কমলেও সন্ধ্যা থেকে তিস্তার পানি আবারও বাড়ছে। তাই চরাঞ্চলবাসীকে সর্তক থাকতে বলা হয়েছে। বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে নিয়ে ইতোমধ্যে পানি উন্নয়ন বোর্ডের সবার ছুটি বাতিল করা হয়েছে। সবাই এখন যে যার স্থানে দায়িত্ব, সেই স্থানে দায়িত্ব পালন করছেন বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা।

পানি উন্নয়ন বোর্ড রংপুরের নির্বাহী প্রকৌশলী রবিউল ইসলাম জানান, তিস্তার কাউনিয়া পয়েন্টে বিপৎসীমার উপর দিয়ে পানি প্রবাহ হচ্ছে। যা রাতে আরও বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তাছাড়া পানি বাড়ায় তিস্তা-সংলগ্ন নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। বিষয়গুলো নিয়ে সবসময় মনিটরিং করা হচ্ছে। যাতে রাস্তা ঘাট, ব্রিজ ভেঙে না যায় সেই বিষয়গুলো মাথায় রেখে কাজ করা হচ্ছে।

লালমনিরহাটে বন্যা পরিস্থিতি: লালমনিরহাটে এ বন্যায় পানিবন্দি হয়ে পড়েছে প্রায় ২৫ হাজার পরিবার। তিস্তার ডালিয়া পয়েন্টে পানির প্রবাহ বিপৎসীমার কাছাকাছি থাকায় আতংকিত হয়ে পড়ছে এখানকার মানুষেরা। নদী তীরবর্তী এলাকার বেশ কিছু রাস্তাঘাট ব্রিজ কালভার্ট পানির তোড়ে ভেঙে গেছে। আমন ধান ও বিভিন্ন সবজি ক্ষেত ডুবে আছে পানিতে। দীর্ঘ সময় ডুবে থাকলে এসব ফসলের মারাত্মক ক্ষতির শঙ্কা করছেন চাষিরা। একই সাথে বন্যার পানির তোড়ে ভেসে গেছে বেশ কিছু পুকুরের মাছ।

লালমনিরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী শুনিল কুমার বলেন, রোববার সকাল ৬টায় তিস্তা নদী ডালিয়া পয়েন্টে পানিপ্রবাহ বেড়ে বিপৎসীমার ২ সেন্টিমিটার ওপর প্রবাহিত হয়। দুপুরে তা কমে গিয়ে বিপৎসীমার নিচে নেমে আসে। আশা করছি দ্রুতই বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি ঘটবে।

লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক এইচ এম রকিব হায়দার বলেন, বন্যাকবলিতদের জন্য ১৩ লাখ টাকা ও ৯০ মেট্রিকটন জিআর চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। আজকে স্বল্প পরিসরে বিতরণ শুরু করেছি। সোমবার সকলের কাছে পৌঁছে যাবে ত্রাণ। বন্যা বাড়লে তা মোকাবিলা করতে জেলা উপজেলা প্রশাসন আমরা প্রস্তুত রয়েছি।

কুড়িগ্রামে বাড়ছে ভাঙন আতঙ্ক: কুড়িগ্রামে ধরলাসহ অন্যান্য নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। প্লাবিত হয়েছে তিস্তার তীরবর্তী রাজারহাট উপজেলার ঘড়িয়ালডাঙ্গা, বিদ্যানন্দ, উলিপুর উপজেলার দলদলিয়া, বজরা, থেতরাই, গুনাইগাছ এবং চিলমারী উপজেলার রমনা মডেল ইউনিয়নের আংশিক অংশ। এসব ইউনিয়নের চর ও নিম্নাঞ্চলের প্রায় ৪ শতাধিক পরিবার, গ্রামীণ কাঁচা সড়কসহ ১৫৯ হেক্টর জমির রোপা আমন এবং মৌসুমি ফসলের খেত নিমজ্জিত হয়ে পড়েছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ড বিভাগ জানায়, ধরলা, দুধকুমার ও ব্রহ্মপুত্র নদের পানি বিভিন্ন পয়েন্টে বৃদ্ধি পেলেও তা বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পানি কমার সম্ভাবনা রয়েছে।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার খাদিজা বেগম বলেন, এ উপজেলায় বন্যা হতে পারে তাই আগাম প্রস্তুতি গ্রহণ করে চরাঞ্চলের মানুষজনকে নিরাপদ স্থানে ও আশ্রয় কেন্দ্রে যাওয়ার পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। এ ছাড়া পানিবন্দিদের মাঝে শুকনা খাবার বিতরণ করা হচ্ছে।

গাইবান্ধার বন্যা পরিস্থিতি: গাইবান্ধা জেলার ১৬৫টি চরের নিম্নাঞ্চলে পানি উঠতে শুরু করেছে। তিস্তার পানি কাউনিয়া পয়েন্টে বিপৎসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হলেও গাইবান্ধার প্রধান তিন নদ-নদীর পানি বিপৎসীমার অনেক নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। আপাতত জেলায় বন্যার আশঙ্কা নেই বলে জানিয়েছে পাউবো।

গাইবান্ধা পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) উপ সহকারী প্রকৌশলী রায়হানুল ইসলাম বলেন, উজান থেকে পানি আসছে এবং গত কয়েকদিনের বৃষ্টির পানিতে জেলার সব নদ-নদীর পানি বাড়তে শুরু করেছে। চরের কিছু নিচু অঞ্চলে পানি প্রবেশ করেছে। তিস্তার পানি বৃদ্ধি পেলেও করতোয়া, ঘাঘট ও ব্রহ্মপুত্র নদের পানি বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। আপাতত এ পানিতে বন্যার আশঙ্কা নেই। আমরা সার্বক্ষণিক নজর রাখছি।

গাইবান্ধা জেলা প্রশাসক চৌধুরী মোয়াজ্জম আহমদ বলেন, সুন্দরগঞ্জ উপজেলার দুই একটি পয়েন্টে পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। করতোয়া, ঘাঘট, ব্রহ্মপুত্র নদের পানি বিপদসীমার অনেক নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। জেলা প্রশাসকের পক্ষ থেকে সবধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।

বাংলাদেশ জার্নাল/আরএইচ