ঢাকা ০৯:৩০ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৫, ৬ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞপ্তি/নোটিশ ::
সারাদেশে প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে... আগ্রহীরা সিভি মেইল করুন:  career@bdnewspost.com  ||   সারাদেশে প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে... আগ্রহীরা সিভি মেইল করুন:  career@bdnewspost.com  ||   সারাদেশে প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে... আগ্রহীরা সিভি মেইল করুন:  career@bdnewspost.com  ||   সারাদেশে প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে... আগ্রহীরা সিভি মেইল করুন:  career@bdnewspost.com  ||   সারাদেশে প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে... আগ্রহীরা সিভি মেইল করুন:  career@bdnewspost.com  ||   সারাদেশে প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে... আগ্রহীরা সিভি মেইল করুন:  career@bdnewspost.com  ||   সারাদেশে প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে... আগ্রহীরা সিভি মেইল করুন:  career@bdnewspost.com  ||   সারাদেশে প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে... আগ্রহীরা সিভি মেইল করুন:  career@bdnewspost.com  ||
সদ্য প্রাপ্ত খবর ::
বি-আর পাওয়ারজেন লিঃ নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি B-R Powergen Restricted Activity Round 2025 bdnewspost.com আজ খুলনার প্রবীণ সাংবাদিক, লোক গবেষক ও অধ্যাপক গোলাম মোস্তফা সিন্দাইনী এর প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী bdnewspost.com Dakhil Math Query Resolution 2025 – Dakhil Math MCQ Query resolution 2025 PDF Obtain bdnewspost.com দাখিল গণিত পরীক্ষার প্রশ্ন ও সমাধান ২০২৫ PDF bdnewspost.com চুয়েটে ক্যাম্পাস রিক্রুটমেন্ট আয়োজন করেছে হুয়াওয়ে bdnewspost.com SSC English 2d Paper Query Solution 2025 – SSC English 2d Paper Query answer 2025 PDF Obtain bdnewspost.com এসএসসি ইংরেজি ২য় পত্র প্রশ্ন সমাধান ২০২৫ PDF সব বোর্ড ঢাকা, যশোর, চট্টগ্রাম, রাজশাহী, কুমিল্লা, দিনাজপুর, ময়মনসিংহ, বরিশাল ও সিলেট বোর্ড bdnewspost.com ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব ল্যাবরেটরী মেডিসিন এন্ড রেফারেল সেন্টার নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি ২০২৫ bdnewspost.com দাখিল আরবি ২য় পত্র পরীক্ষার প্রশ্ন ও সমাধান ২০২৫ PDF bdnewspost.com SSC English 1st Paper Query resolution 2025 – SSC English 1st Paper Query Resolution 2025 PDF Obtain All Board bdnewspost.com

দলগুলোকে নিয়ে কাউন্সিল গঠনের পরামর্শ

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০৮:০৭:১৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৯ অক্টোবর ২০২৪ ৬০ বার পড়া হয়েছে


রাষ্ট্রপতি অপসারণ ইস্যুতে জাতীয় নাগরিক কমিটির আহ্বায়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী জানিয়েছেন, তারা সরকারের কাছে সব রাজনৈতিক দলকে নিয়ে একটা কাউন্সিল গঠনের পরামর্শ দেবেন। সেখানে ঐকমত্যের ভিত্তিতে কে কোন প্রক্রিয়ায় রাষ্ট্রপতি হবেন, তা তারাই আলোচনা করে নির্ধারণ করবেন।

মঙ্গলবার (২৯ অক্টোবর) বাম গণতান্ত্রিক জোটের নেতাদের সঙ্গে বৈঠকের মধ্য দিয়ে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনকে অপসারণের দাবি নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা গুছিয়ে এনেছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটির নেতারা। দুপুরে রাজধানীর পুরানা পল্টনের মুক্তি ভবনে বাম জোটের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন তারা।

বৈঠকে বাম গণতান্ত্রিক জোটের পক্ষে ছিলেন বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন (প্রিন্স), বাসদের সহকারী সাধারণ সম্পাদক রাজেকুজ্জামান রতন, বাম গণতান্ত্রিক জোটের সমন্বয়ক ও বাসদের (মার্ক্সবাদী) সমন্বয়ক মাসুদ রানা, বিপ্লবী কমিউনিস্ট লীগের সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য আবদুস সাত্তার, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক পার্টির নির্বাহী সভাপতি আবদুল আলী এবং গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টির সাধারণ সম্পাদক মোশরেফা মিশু। অপর দিকে যৌথ প্রতিনিধিদলে জাতীয় নাগরিক কমিটির আহ্বায়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী ছাড়াও মুখপাত্র সামান্তা শারমিন, রাজনীতিবিষয়ক সম্পাদক আরিফুল ইসলাম আদীব, সদস্য সাইফ মোস্তাফিজ এবং বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আবদুল্লাহ ও সদস্যসচিব আরিফ সোহেল ছিলেন।

নাগরিক কমিটির আহ্বায়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেন, এই কয়েক দিনের আলোচনায় আমরা যে সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছি, তা হচ্ছে এই রাষ্ট্রপতিকে যেতেই হবে। রাজনৈতিক দলগুলো এ বিষয়ে নিজেদের মধ্যে আলোচনাটা ওইভাবে করেনি বা নিজেদের মধ্যে সক্রিয়তার অভাব দেখেছি আমরা। জাতীয় নাগরিক কমিটি ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পক্ষ থেকে আমরা উদ্যোগটা নেয়ার পর তাদের মধ্যে ওই বোঝাপড়াটা এসেছে, সচেতনতাটা এসেছে এবং তাদের যে ঐকমত্য হওয়া প্রয়োজন, সেটা তারা অনুধাবন করেছে। তাদের মধ্যে যে বিক্রিয়াটা করা, সেটা আমরা করতে পেরেছি বলে বিশ্বাস করি। তারা বলেছেন, দলীয় ফোরামসহ বিভিন্ন জায়গায় আলোচনার মাধ্যমে এর একটা সমাধান করবেন এবং এটার সমাধান হবেই।

তিনি আরও বলেন, রাষ্ট্রপতি পদে আমাদের কোনো প্রস্তাব নেই। দেশের সব রাজনৈতিক দল ও অংশীজনেরা বসে ঠিক করুক। তারা আলোচনার মাধ্যমে নির্ধারণ করুক। আমরাও সেই আলোচনায় অংশ নেব। কিন্তু ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থার অংশ হওয়া যাবে না, এটা হচ্ছে আমাদের মূল কনসার্ন (উদ্বেগ)। আমাদের দাবি ছিল, ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থার বিলোপ। আমরা বলিনি যে বিলোপ করে আমরাই কাউকে নিয়োগ দেব। রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি আমাদের আহ্বান থাকবে, সজ্জন কোনো ব্যক্তিকে আপনারা রাখবেন। আমরা সরকারের কাছে প্রস্তাব দেব, সব রাজনৈতিক দলকে নিয়ে একটা কাউন্সিল হোক। সেখানে ঐকমত্যের ভিত্তিতে কে কোন প্রক্রিয়ায় রাষ্ট্রপতি হবেন, তা তারাই আলোচনা করে নির্ধারণ করুক।

জাতীয় নাগরিক কমিটির আহ্বায়ক বলেন, রাষ্ট্রপতির অপসারণের বিষয়ে বাম গণতান্ত্রিক জোটের নৈতিক সমর্থন রয়েছে। কিন্তু প্রক্রিয়াটা কীভাবে হবে, সে বিষয়ে তাদের মধ্যে আলোচনা চলছে। তারা দেশের বিশিষ্টজন, নিজেদের দলীয় ফোরাম ও বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে এবং এ বিষয়ে সরকারের সঙ্গেও আলোচনা করবে।

বাম জোট বিগত তিনটি নির্বাচনকে অবৈধ মনে করে উল্লেখ করে নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেন, জুলাই অভ্যুত্থানের স্পিরিট ধারণ করে সব মানুষের অংশগ্রহণে প্রক্লেমেশন অব সেকেন্ড রিপাবলিক ডিক্লারেশনের বিষয়ে দুটি মতামত নিয়ে আমরা তাদের সঙ্গে সম্মত হয়েছি৷ দ্রব্যমূল্যের ব্যবস্থাপনায় তারা সিন্ডিকেটের বিষয়টি এনেছেন। কতগুলো রাজনৈতিক দল সেই সিন্ডিকেটগুলো এখনো চালিয়ে যাচ্ছে। ক্ষমতার পরিবর্তন হয়েছে, ব্যক্তি চলে গেছে, কিন্তু ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থা অন্যান্য দল দখলে নিয়েছে। জোটের নেতারা বলেছেন, সেই ব্যবস্থার বিলোপের জন্য নিকট ভবিষ্যতে মাঠের সংগ্রামে তারা আমাদের সঙ্গে থাকবেন।

বৈঠক শেষে বাম গণতান্ত্রিক জোটের সমন্বয়ক ও বাসদের (মার্ক্সবাদী) সমন্বয়ক মাসুদ রানা বলেন, আমরা বলেছি, রাজনৈতিক দলগুলোর ঐকমত্যকে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেয়া দরকার। ভবিষ্যতের কর্মপরিকল্পনার ব্যাপারেও রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে একমত হয়ে পরবর্তী কার্যক্রমগুলো পরিচালনা করা দরকার। রাষ্ট্রপতিকে অপসারণের ব্যাপারে আমাদের নৈতিক আপত্তি নেই বলে আমরা জানিয়েছি। কিন্তু এটার প্রক্রিয়া কী হবে, সাংবিধানিক ভিত্তি কতটুকু আছে, এ বিষয়গুলো নিয়ে আমাদের নিজেদের মধ্যে আলোচনার প্রয়োজন আছে।

বৈঠকে সমসাময়িক রাজনৈতিক প্রসঙ্গও এসেছে বলে জানান বাম জোটের সমন্বয়ক। তিনি বলেন, দ্বিতীয় প্রজাতন্ত্রের ঘোষণার বিষয়ে আমরা বলেছি, এই অভ্যুত্থানের মূল স্পিরিটকে আমাদের ধারণ করা উচিত। সেটা হচ্ছে আমরা একটা বৈষম্যহীন বাংলাদেশ চাই। এটাকে স্পিরিট হিসেবে নিয়ে ফ্যাসিবাদ থেকে গণতন্ত্রে উত্তরণের লড়াইকে আমরা মূল জায়গা মনে করি।

মুক্তিযুদ্ধ আওয়ামী লীগের কোনো সম্পত্তি নয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, লাখ লাখ মানুষের জীবনদানের মধ্য দিয়ে যে মুক্তিযুদ্ধ হয়েছে, সেই জনগণের আকাঙ্ক্ষাকে ধারণ করে আমাদের লড়াইটা এগিয়ে নেয়া উচিত। এ ছাড়া গণঅভ্যুত্থান ঘিরে হত্যাকাণ্ডের বিচার, আহত-নিহতদের তালিকা প্রকাশ, চিকিৎসা ও পুনর্বাসন, দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ, সিন্ডিকেট ভেঙে দেওয়া, রেশনিং ব্যবস্থা চালু, অত্যাবশ্যকীয় পণ্যের রাষ্ট্রীয় বাণিজ্য চালু করা, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি ঘটাতে সরকারের কার্যকর পদক্ষেপ, বেসামরিক প্রশাসনের কার্যকর ভূমিকা- এ বিষয়গুলোও জোটের পক্ষ থেকে বৈঠকে তুলে ধরা হয় বলে জানান মাসুদ রানা।

বাম জোটের সমন্বয়ক বলেন, এই সরকারের গুরুত্বপূর্ণ কাজ হচ্ছে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করে একটা সুষ্ঠু নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা করা এবং তার জন্য যতটুকু সংস্কার প্রয়োজন, সেই সংস্কারে এই সরকারের হাত দেয়াটা দরকার।

এ সময় সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পাটির (সিপিবি) সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স বলেন, বিএনপি দেশের একটি বড় রাজনৈতিক দল। এ ক্ষেত্রে ঐকমত্য হতে গেলে বিএনপিসহ বামপন্থীরা কথা বলে ঐকমত্য তৈরি করতে হবে। সেটা না হলে তো আর এগোনোর বিষয় নেই।

রাজনৈতিক দলগুলোকে আস্থায় নিয়ে তাদের সঙ্গে কথা বলে অন্তর্বর্তী সরকারকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে উল্লেখ করে রুহিন হোসেন প্রিন্স বলেন, দেশের এ ধরনের বড় গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তে সংকট সমাধানে সরকারেরই উদ্যোগ নেওয়া উচিত।

অপর এক প্রশ্নের জবাবে বাসদ নেতা রাজেকুজ্জামান রতন বলেন, গণঅভ্যুত্থান কোনো আইন মেনে হয়নি। কিন্তু একটা রাষ্ট্র পরিচালনা করতে গেলে আইন লাগে। ফলে একদিকে গণঅভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষাকে ধারণ করতে হবে, আবার গণতন্ত্রে উত্তরণের জন্য এমন পদ্ধতি নিতে হবে, যাতে ফ্যাসিবাদ থেকে গণতন্ত্রে উত্তরণ ঘটে।

তিনি আরও বলেন, এমন কোনো পথ আমরা এখনই নিতে চাই না, যা নতুন কোনো ষড়যন্ত্রের পথ খুলে দিতে পারে।

প্রসঙ্গত, এর আগে রাষ্ট্রপতির অপসারণসহ পাঁচ দফা দাবি নিয়ে জাতীয় ঐকমত্য তৈরির লক্ষ্যে জাতীয় নাগরিক কমিটি ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা ছয় দিনে বিএনপি, জামায়াতে ইসলামীসহ ছয়টি দল ও তিনটি জোটের সঙ্গে আলোচনা করেছেন।

বাংলাদেশ জার্নাল/কেএইচ




নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য

দলগুলোকে নিয়ে কাউন্সিল গঠনের পরামর্শ

আপডেট সময় : ০৮:০৭:১৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৯ অক্টোবর ২০২৪


রাষ্ট্রপতি অপসারণ ইস্যুতে জাতীয় নাগরিক কমিটির আহ্বায়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী জানিয়েছেন, তারা সরকারের কাছে সব রাজনৈতিক দলকে নিয়ে একটা কাউন্সিল গঠনের পরামর্শ দেবেন। সেখানে ঐকমত্যের ভিত্তিতে কে কোন প্রক্রিয়ায় রাষ্ট্রপতি হবেন, তা তারাই আলোচনা করে নির্ধারণ করবেন।

মঙ্গলবার (২৯ অক্টোবর) বাম গণতান্ত্রিক জোটের নেতাদের সঙ্গে বৈঠকের মধ্য দিয়ে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনকে অপসারণের দাবি নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা গুছিয়ে এনেছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটির নেতারা। দুপুরে রাজধানীর পুরানা পল্টনের মুক্তি ভবনে বাম জোটের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন তারা।

বৈঠকে বাম গণতান্ত্রিক জোটের পক্ষে ছিলেন বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন (প্রিন্স), বাসদের সহকারী সাধারণ সম্পাদক রাজেকুজ্জামান রতন, বাম গণতান্ত্রিক জোটের সমন্বয়ক ও বাসদের (মার্ক্সবাদী) সমন্বয়ক মাসুদ রানা, বিপ্লবী কমিউনিস্ট লীগের সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য আবদুস সাত্তার, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক পার্টির নির্বাহী সভাপতি আবদুল আলী এবং গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টির সাধারণ সম্পাদক মোশরেফা মিশু। অপর দিকে যৌথ প্রতিনিধিদলে জাতীয় নাগরিক কমিটির আহ্বায়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী ছাড়াও মুখপাত্র সামান্তা শারমিন, রাজনীতিবিষয়ক সম্পাদক আরিফুল ইসলাম আদীব, সদস্য সাইফ মোস্তাফিজ এবং বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আবদুল্লাহ ও সদস্যসচিব আরিফ সোহেল ছিলেন।

নাগরিক কমিটির আহ্বায়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেন, এই কয়েক দিনের আলোচনায় আমরা যে সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছি, তা হচ্ছে এই রাষ্ট্রপতিকে যেতেই হবে। রাজনৈতিক দলগুলো এ বিষয়ে নিজেদের মধ্যে আলোচনাটা ওইভাবে করেনি বা নিজেদের মধ্যে সক্রিয়তার অভাব দেখেছি আমরা। জাতীয় নাগরিক কমিটি ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পক্ষ থেকে আমরা উদ্যোগটা নেয়ার পর তাদের মধ্যে ওই বোঝাপড়াটা এসেছে, সচেতনতাটা এসেছে এবং তাদের যে ঐকমত্য হওয়া প্রয়োজন, সেটা তারা অনুধাবন করেছে। তাদের মধ্যে যে বিক্রিয়াটা করা, সেটা আমরা করতে পেরেছি বলে বিশ্বাস করি। তারা বলেছেন, দলীয় ফোরামসহ বিভিন্ন জায়গায় আলোচনার মাধ্যমে এর একটা সমাধান করবেন এবং এটার সমাধান হবেই।

তিনি আরও বলেন, রাষ্ট্রপতি পদে আমাদের কোনো প্রস্তাব নেই। দেশের সব রাজনৈতিক দল ও অংশীজনেরা বসে ঠিক করুক। তারা আলোচনার মাধ্যমে নির্ধারণ করুক। আমরাও সেই আলোচনায় অংশ নেব। কিন্তু ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থার অংশ হওয়া যাবে না, এটা হচ্ছে আমাদের মূল কনসার্ন (উদ্বেগ)। আমাদের দাবি ছিল, ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থার বিলোপ। আমরা বলিনি যে বিলোপ করে আমরাই কাউকে নিয়োগ দেব। রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি আমাদের আহ্বান থাকবে, সজ্জন কোনো ব্যক্তিকে আপনারা রাখবেন। আমরা সরকারের কাছে প্রস্তাব দেব, সব রাজনৈতিক দলকে নিয়ে একটা কাউন্সিল হোক। সেখানে ঐকমত্যের ভিত্তিতে কে কোন প্রক্রিয়ায় রাষ্ট্রপতি হবেন, তা তারাই আলোচনা করে নির্ধারণ করুক।

জাতীয় নাগরিক কমিটির আহ্বায়ক বলেন, রাষ্ট্রপতির অপসারণের বিষয়ে বাম গণতান্ত্রিক জোটের নৈতিক সমর্থন রয়েছে। কিন্তু প্রক্রিয়াটা কীভাবে হবে, সে বিষয়ে তাদের মধ্যে আলোচনা চলছে। তারা দেশের বিশিষ্টজন, নিজেদের দলীয় ফোরাম ও বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে এবং এ বিষয়ে সরকারের সঙ্গেও আলোচনা করবে।

বাম জোট বিগত তিনটি নির্বাচনকে অবৈধ মনে করে উল্লেখ করে নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেন, জুলাই অভ্যুত্থানের স্পিরিট ধারণ করে সব মানুষের অংশগ্রহণে প্রক্লেমেশন অব সেকেন্ড রিপাবলিক ডিক্লারেশনের বিষয়ে দুটি মতামত নিয়ে আমরা তাদের সঙ্গে সম্মত হয়েছি৷ দ্রব্যমূল্যের ব্যবস্থাপনায় তারা সিন্ডিকেটের বিষয়টি এনেছেন। কতগুলো রাজনৈতিক দল সেই সিন্ডিকেটগুলো এখনো চালিয়ে যাচ্ছে। ক্ষমতার পরিবর্তন হয়েছে, ব্যক্তি চলে গেছে, কিন্তু ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থা অন্যান্য দল দখলে নিয়েছে। জোটের নেতারা বলেছেন, সেই ব্যবস্থার বিলোপের জন্য নিকট ভবিষ্যতে মাঠের সংগ্রামে তারা আমাদের সঙ্গে থাকবেন।

বৈঠক শেষে বাম গণতান্ত্রিক জোটের সমন্বয়ক ও বাসদের (মার্ক্সবাদী) সমন্বয়ক মাসুদ রানা বলেন, আমরা বলেছি, রাজনৈতিক দলগুলোর ঐকমত্যকে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেয়া দরকার। ভবিষ্যতের কর্মপরিকল্পনার ব্যাপারেও রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে একমত হয়ে পরবর্তী কার্যক্রমগুলো পরিচালনা করা দরকার। রাষ্ট্রপতিকে অপসারণের ব্যাপারে আমাদের নৈতিক আপত্তি নেই বলে আমরা জানিয়েছি। কিন্তু এটার প্রক্রিয়া কী হবে, সাংবিধানিক ভিত্তি কতটুকু আছে, এ বিষয়গুলো নিয়ে আমাদের নিজেদের মধ্যে আলোচনার প্রয়োজন আছে।

বৈঠকে সমসাময়িক রাজনৈতিক প্রসঙ্গও এসেছে বলে জানান বাম জোটের সমন্বয়ক। তিনি বলেন, দ্বিতীয় প্রজাতন্ত্রের ঘোষণার বিষয়ে আমরা বলেছি, এই অভ্যুত্থানের মূল স্পিরিটকে আমাদের ধারণ করা উচিত। সেটা হচ্ছে আমরা একটা বৈষম্যহীন বাংলাদেশ চাই। এটাকে স্পিরিট হিসেবে নিয়ে ফ্যাসিবাদ থেকে গণতন্ত্রে উত্তরণের লড়াইকে আমরা মূল জায়গা মনে করি।

মুক্তিযুদ্ধ আওয়ামী লীগের কোনো সম্পত্তি নয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, লাখ লাখ মানুষের জীবনদানের মধ্য দিয়ে যে মুক্তিযুদ্ধ হয়েছে, সেই জনগণের আকাঙ্ক্ষাকে ধারণ করে আমাদের লড়াইটা এগিয়ে নেয়া উচিত। এ ছাড়া গণঅভ্যুত্থান ঘিরে হত্যাকাণ্ডের বিচার, আহত-নিহতদের তালিকা প্রকাশ, চিকিৎসা ও পুনর্বাসন, দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ, সিন্ডিকেট ভেঙে দেওয়া, রেশনিং ব্যবস্থা চালু, অত্যাবশ্যকীয় পণ্যের রাষ্ট্রীয় বাণিজ্য চালু করা, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি ঘটাতে সরকারের কার্যকর পদক্ষেপ, বেসামরিক প্রশাসনের কার্যকর ভূমিকা- এ বিষয়গুলোও জোটের পক্ষ থেকে বৈঠকে তুলে ধরা হয় বলে জানান মাসুদ রানা।

বাম জোটের সমন্বয়ক বলেন, এই সরকারের গুরুত্বপূর্ণ কাজ হচ্ছে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করে একটা সুষ্ঠু নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা করা এবং তার জন্য যতটুকু সংস্কার প্রয়োজন, সেই সংস্কারে এই সরকারের হাত দেয়াটা দরকার।

এ সময় সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পাটির (সিপিবি) সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স বলেন, বিএনপি দেশের একটি বড় রাজনৈতিক দল। এ ক্ষেত্রে ঐকমত্য হতে গেলে বিএনপিসহ বামপন্থীরা কথা বলে ঐকমত্য তৈরি করতে হবে। সেটা না হলে তো আর এগোনোর বিষয় নেই।

রাজনৈতিক দলগুলোকে আস্থায় নিয়ে তাদের সঙ্গে কথা বলে অন্তর্বর্তী সরকারকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে উল্লেখ করে রুহিন হোসেন প্রিন্স বলেন, দেশের এ ধরনের বড় গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তে সংকট সমাধানে সরকারেরই উদ্যোগ নেওয়া উচিত।

অপর এক প্রশ্নের জবাবে বাসদ নেতা রাজেকুজ্জামান রতন বলেন, গণঅভ্যুত্থান কোনো আইন মেনে হয়নি। কিন্তু একটা রাষ্ট্র পরিচালনা করতে গেলে আইন লাগে। ফলে একদিকে গণঅভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষাকে ধারণ করতে হবে, আবার গণতন্ত্রে উত্তরণের জন্য এমন পদ্ধতি নিতে হবে, যাতে ফ্যাসিবাদ থেকে গণতন্ত্রে উত্তরণ ঘটে।

তিনি আরও বলেন, এমন কোনো পথ আমরা এখনই নিতে চাই না, যা নতুন কোনো ষড়যন্ত্রের পথ খুলে দিতে পারে।

প্রসঙ্গত, এর আগে রাষ্ট্রপতির অপসারণসহ পাঁচ দফা দাবি নিয়ে জাতীয় ঐকমত্য তৈরির লক্ষ্যে জাতীয় নাগরিক কমিটি ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা ছয় দিনে বিএনপি, জামায়াতে ইসলামীসহ ছয়টি দল ও তিনটি জোটের সঙ্গে আলোচনা করেছেন।

বাংলাদেশ জার্নাল/কেএইচ