ঢাকা ০৭:৫৭ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৫, ৬ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞপ্তি/নোটিশ ::
সারাদেশে প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে... আগ্রহীরা সিভি মেইল করুন:  career@bdnewspost.com  ||   সারাদেশে প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে... আগ্রহীরা সিভি মেইল করুন:  career@bdnewspost.com  ||   সারাদেশে প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে... আগ্রহীরা সিভি মেইল করুন:  career@bdnewspost.com  ||   সারাদেশে প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে... আগ্রহীরা সিভি মেইল করুন:  career@bdnewspost.com  ||   সারাদেশে প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে... আগ্রহীরা সিভি মেইল করুন:  career@bdnewspost.com  ||   সারাদেশে প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে... আগ্রহীরা সিভি মেইল করুন:  career@bdnewspost.com  ||   সারাদেশে প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে... আগ্রহীরা সিভি মেইল করুন:  career@bdnewspost.com  ||   সারাদেশে প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে... আগ্রহীরা সিভি মেইল করুন:  career@bdnewspost.com  ||
সদ্য প্রাপ্ত খবর ::
বি-আর পাওয়ারজেন লিঃ নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি B-R Powergen Restricted Activity Round 2025 bdnewspost.com আজ খুলনার প্রবীণ সাংবাদিক, লোক গবেষক ও অধ্যাপক গোলাম মোস্তফা সিন্দাইনী এর প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী bdnewspost.com Dakhil Math Query Resolution 2025 – Dakhil Math MCQ Query resolution 2025 PDF Obtain bdnewspost.com দাখিল গণিত পরীক্ষার প্রশ্ন ও সমাধান ২০২৫ PDF bdnewspost.com চুয়েটে ক্যাম্পাস রিক্রুটমেন্ট আয়োজন করেছে হুয়াওয়ে bdnewspost.com SSC English 2d Paper Query Solution 2025 – SSC English 2d Paper Query answer 2025 PDF Obtain bdnewspost.com এসএসসি ইংরেজি ২য় পত্র প্রশ্ন সমাধান ২০২৫ PDF সব বোর্ড ঢাকা, যশোর, চট্টগ্রাম, রাজশাহী, কুমিল্লা, দিনাজপুর, ময়মনসিংহ, বরিশাল ও সিলেট বোর্ড bdnewspost.com ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব ল্যাবরেটরী মেডিসিন এন্ড রেফারেল সেন্টার নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি ২০২৫ bdnewspost.com দাখিল আরবি ২য় পত্র পরীক্ষার প্রশ্ন ও সমাধান ২০২৫ PDF bdnewspost.com SSC English 1st Paper Query resolution 2025 – SSC English 1st Paper Query Resolution 2025 PDF Obtain All Board bdnewspost.com

খাতে খাতে নৈরাজ্যের আঘাত

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০৯:৩০:১৪ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৩ অক্টোবর ২০২৪ ৬৬ বার পড়া হয়েছে


পাহাড় শান্ত হতে না হতেই সমতলের এখানে-ওখানে নৈরাজ্যের এন্তার দাওয়াই। বাজার-মাজার, পাতাল-হাসপাতাল কিছুই ছাড় বা বাদ থাকছে না। নামিয়ে দেওয়া হয়েছে ঢাকার আলোচিত সাত কলেজের শিক্ষার্থীদেরও। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত হতে বছরের পর বছর মাঠ কাঁপানোর জন্য যারা ছিল বহুল আলোচিত। সোমবার মাঠে নেমে তারা দিল একেবারে উল্টা বার্তা। এখন বলছে, তাদের আর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত রাখা যাবে না। পূর্ণাঙ্গ স্বায়ত্তশাসিত একটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করে দিতে হবে তাদের জন্য। এই দাবিতে নীলক্ষেত ও সাইন্সল্যাব এলাকা কাঁপিয়ে দিয়েছে। তাদের এই মহড়ায় নামিয়ে কিছু একটা ঘটানোর আশায় খাদকমহল।

এর আগের দিন বলা নেই কওয়া নেই; এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফলাফল বাতিল করে নতুন রেজাল্ট দেওয়ার দাবি সামনে এনে নামিয়ে দেওয়া হয়েছে আরেক গ্রুপকে। একদল ছাত্র ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের প্রধান ফটক ভেঙে ভেতরে ঢুকে তোলপাড় করে দিয়েছে। ঘোষিত ফলাফলকে বৈষম্যমূলক দাবি করে ‘এইচএসসি ব্যাচ ২০২৪’-এর ব্যানারে একদল শিক্ষার্থী কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার থেকে মিছিল নিয়ে ঢাকা মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের উদ্দেশে রওয়ানা দেয়।

দুপুর ১টার দিকে মিছিলটি বোর্ডের ফটকের সামনে পৌঁছায়। তাদের মধ্যে কৃতকার্য শিক্ষার্থীরাও ছিল। একপর্যায়ে ফটকের তালা ভেঙে শিক্ষার্থীরা বোর্ডের ভেতরে ঢুকে পড়ে। এসময় বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী আহত হয়। বোর্ড কর্মকর্তারা বলছেন, শিক্ষার্থীরা বোর্ডের চেয়ারম্যানের কক্ষে ভাঙচুর করে। পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করে। ঢাকা মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক তপন কুমার সরকার বলেন, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনার আলোকে এই পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ করা হয়েছে। এখন তার পক্ষে কিছু করা সম্ভব নয়।

ব্যাপক চেষ্টায় সামলানোর পর গার্মন্টসসহ শিল্প সেক্টরে নৈরাজ্য সৃষ্টির আয়োজন শুরু হয়েছে নতুন করে। টোকাটা আসছে এবারও আশুলিয়ার দিক থেকে। তা আজ এক কারখানায়, কাল আরেক কারখানায়। সর্বশেষ মঙ্গলবারও দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়ে একটি কারখানার শ্রমিকরা বাইপাইল পয়েন্ট অবরোধ করে। ওই এলাকায় এমন দু-একটি পয়েন্ট ঘণ্টা কয়েক আটকে দিতে পারলেই ঢাকা-টাঙ্গাইল এবং ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে যানজট বাঁধিয়ে অনাসৃষ্টি ঘটানো যথেষ্ট। গায়ে পড়ে ঝগড়া বা গণ্ডগোল বাধানোর পাশাপাশি বিভিন্ন খাতে গত ক’দিন অশান্তির নতুন টোকা চলছে সমানে।

বিদ্যুৎ সেক্টরে মহাগণ্ডগোল প্রায় পাকিয়েই ফেলা হয়েছিল। একটু বিলম্বে হলেও সরকারের শক্ত অ্যাকশনে এবারের মতো রক্ষা মিলেছে। জ্বালানি ও খনিজসম্পদ উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খানের কড়া হুঁশিয়ারিতে কাজে ফিরেছে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কর্মীরা । কাজে যোগ না দিলে বিকল্প জনবল নিয়োগের হুঁশিয়ারিটি কাজে লেগেছে। দুর্নীতি ও নাশকতা চেষ্টার প্রমাণ পাওয়ায় গেলো সপ্তায় চাকরিচ্যুত করা হয় পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি ২৪ জনকে, আটক করা হয় বেশ কয়েকজনকে। চাকরিচ্যুতদের চাকরি পুনঃবহাল ও আটকদের মুক্তির দাবিতে কমপ্লিট শাটডাউন বা বিদ্যুৎ বন্ধের ঘোষণা দেয় তারা। কিন্তু নির্দিষ্ট সময় পার হওয়ার আগেই বিভিন্ন জায়গায় ৩ থেকে ৬ ঘণ্টা বিদ্যুৎ বন্ধ রাখে তারা। এমন বাস্তবতায় চরম অনিশ্চয়তায় পড়ে ৮০টি পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির প্রায় ৩ কোটি ৬০ লাখ গ্রাহক।

নৈরাজ্য পাকানোর কুশীলবদের গাঁথুনি নানান জায়গায়। বিভিন্ন মহলকে হরেক বায়না ও দাবিনামায় ব্যস্ত করে রাস্তায় নামিয়ে যাকে দিয়ে যেখানে সম্ভব ঘণ্ডগোল পাকাচ্ছে তারা। সরকারের দিক থেকে অ্যাকশন কড়া হলে লেজগুটিয়ে পালাচ্ছে দ্রুত। তবে, সরকারকে ব্যতিব্যস্ত রাখার কাজে শতভাগ সফল তারা।

বাস্তবে সরকারের এমন কঠোর বা বিপ্লবী হওয়ার দিন-সময় ফুরিয়ে গেছে। সেটা সম্ভব এবং সম্ভাবনার ছিল পয়লা রাতে বিড়াল মারার মতো ক্ষমতাগ্রহণের পরপরই। সরকার সেদিকে যায়নি। বিপ্লব পরবর্তীতে ক্ষমতায় আসা সরকার স্বভাবতই বিপ্লবী সরকার হলেও তা হয়নি। এ সরকারের চলন-বলন তুলনামূলক সুশীল ধাঁচের। কিন্তু, বেশিরভাগ মানুষেরই প্রত্যাশা সরকার কঠোর হোক।

নাবালক, সাবালক, মতলবাজ, উগ্রবাজ, প্রতিশোধবাজ, সুবিধাবাজদের তৎপরতা স্পষ্ট। এই চরিত্রের চক্র আগে করেছে ফ্রিস্টাইল। এখন করছে পেয়ে বসার ব্যবসা। তা দূরবীণ দিয়ে দেখার বিষয় নয়। খোলা চোখেই খোলাসা। গত দুই-আড়াই মাসে ব্যাংকে আমানত কমেছে ১১০০০ কোটি টাকার বেশি। তা অনেকটা স্বাভাবিক। কারণ ব্যাংকগুলোর সিংহভাগ জনসাধারণের আস্থা হারিয়েছে। জনগণ এখানে আমানত রাখতে ভয় পাচ্ছে আস্থাহীনতার কারণে। তা ব্যাংক, বীমা, গ্যাস, বিদ্যুৎ, বাজার, রাস্তাঘাট সবখানে-সব সেক্টরেই, যা নানা খাতে সংস্কারচেষ্টাকে মার খাইয়ে দিতে পারছে।

এমন একটা সময়ে উপদেষ্টা আসিফ শুনিয়েছেন কঠিন কথা। বলেছেন, ‘এই সরকার স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় ক্ষমতায় আসেনি। এটা একটা বিপ্লবী সরকার। ঊর্ধ্বতন সরকারি কর্মকর্তারা কথা না শুনলে, আইনে থাকুক, আর নাই থাকুক, তাদের চাকরি থেকে অব্যাহতি দেওয়া হবে’।

বাস্তবে সরকারের এমন কঠোর বা বিপ্লবী হওয়ার দিন-সময় ফুরিয়ে গেছে। সেটা সম্ভব এবং সম্ভাবনার ছিল পয়লা রাতে বিড়াল মারার মতো ক্ষমতাগ্রহণের পরপরই। সরকার সেদিকে যায়নি। বিপ্লব পরবর্তীতে ক্ষমতায় আসা সরকার স্বভাবতই বিপ্লবী সরকার হলেও তা হয়নি। এ সরকারের চলন-বলন তুলনামূলক সুশীল ধাঁচের। কিন্তু, বেশিরভাগ মানুষেরই প্রত্যাশা সরকার কঠোর হোক। বিপ্লবী অ্যাকশনে যাক। না অ্যাকশন না কোমল মধ্যমানের পদক্ষেপে সরকার দমনে না গিয়ে নিয়ন্ত্রণমূলক পদক্ষেপে এগোচ্ছে। এর অংশ হিসেবেই ডিম ও তেল আমদানিকারকদের ২০ ও পাঁচ শতাংশ হারে কর ছাড়। কিন্তু, কোনো আমদানিকারক বা সিন্ডিকেট সদস্যকে শাস্তি দেওয়ার তথ্য নেই।

পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্টদেরও একই প্রশ্ন। ২৮টি কোম্পানিক জেড ক্যাটাগরিতে পাঠানো হয়েছে। জেড ক্যাটাগরির সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান বিএসইসি ও কোম্পানির পরিচালককে শাস্তির আওতায় আনা হয়নি। এর মাঝে সুসংবাদ যোগ করেছেন অর্থ ও বাণিজ্য উপদেষ্টা ডক্টর সালেহউদ্দিন আহমেদ। জানিয়েছেন, পাচার হওয়া অর্থ ফেরাতে সর্বাত্মক চেষ্টায় কাজ শুরু করেছে সরকার। সচিবালয়ে সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত উপদেষ্টা কমিটির বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের কাছে তিনি বলেন, ডিমের মতো অন্য নিত্যপণ্যেরও দাম কমবে। এদিকে, বাংলাদেশ ব্যাংক জানিয়েছে, রেমিট্যান্সপ্রবাহ বাড়ায় গত সপ্তাহে থেকে প্রতিদিনই রিজার্ভের পরিমাণ বাড়ছে। মাঝেমধ্যে এ ধরনের খবরে আস্থার বারতা জোগায়।

লেখক: সাংবাদিক-কলামিস্ট; ডেপুটি হেড অব নিউজ, বাংলাভিশন।

এইচআর/ফারুক/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।


নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য
ট্যাগস :

খাতে খাতে নৈরাজ্যের আঘাত

আপডেট সময় : ০৯:৩০:১৪ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৩ অক্টোবর ২০২৪


পাহাড় শান্ত হতে না হতেই সমতলের এখানে-ওখানে নৈরাজ্যের এন্তার দাওয়াই। বাজার-মাজার, পাতাল-হাসপাতাল কিছুই ছাড় বা বাদ থাকছে না। নামিয়ে দেওয়া হয়েছে ঢাকার আলোচিত সাত কলেজের শিক্ষার্থীদেরও। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত হতে বছরের পর বছর মাঠ কাঁপানোর জন্য যারা ছিল বহুল আলোচিত। সোমবার মাঠে নেমে তারা দিল একেবারে উল্টা বার্তা। এখন বলছে, তাদের আর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত রাখা যাবে না। পূর্ণাঙ্গ স্বায়ত্তশাসিত একটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করে দিতে হবে তাদের জন্য। এই দাবিতে নীলক্ষেত ও সাইন্সল্যাব এলাকা কাঁপিয়ে দিয়েছে। তাদের এই মহড়ায় নামিয়ে কিছু একটা ঘটানোর আশায় খাদকমহল।

এর আগের দিন বলা নেই কওয়া নেই; এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফলাফল বাতিল করে নতুন রেজাল্ট দেওয়ার দাবি সামনে এনে নামিয়ে দেওয়া হয়েছে আরেক গ্রুপকে। একদল ছাত্র ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের প্রধান ফটক ভেঙে ভেতরে ঢুকে তোলপাড় করে দিয়েছে। ঘোষিত ফলাফলকে বৈষম্যমূলক দাবি করে ‘এইচএসসি ব্যাচ ২০২৪’-এর ব্যানারে একদল শিক্ষার্থী কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার থেকে মিছিল নিয়ে ঢাকা মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের উদ্দেশে রওয়ানা দেয়।

দুপুর ১টার দিকে মিছিলটি বোর্ডের ফটকের সামনে পৌঁছায়। তাদের মধ্যে কৃতকার্য শিক্ষার্থীরাও ছিল। একপর্যায়ে ফটকের তালা ভেঙে শিক্ষার্থীরা বোর্ডের ভেতরে ঢুকে পড়ে। এসময় বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী আহত হয়। বোর্ড কর্মকর্তারা বলছেন, শিক্ষার্থীরা বোর্ডের চেয়ারম্যানের কক্ষে ভাঙচুর করে। পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করে। ঢাকা মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক তপন কুমার সরকার বলেন, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনার আলোকে এই পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ করা হয়েছে। এখন তার পক্ষে কিছু করা সম্ভব নয়।

ব্যাপক চেষ্টায় সামলানোর পর গার্মন্টসসহ শিল্প সেক্টরে নৈরাজ্য সৃষ্টির আয়োজন শুরু হয়েছে নতুন করে। টোকাটা আসছে এবারও আশুলিয়ার দিক থেকে। তা আজ এক কারখানায়, কাল আরেক কারখানায়। সর্বশেষ মঙ্গলবারও দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়ে একটি কারখানার শ্রমিকরা বাইপাইল পয়েন্ট অবরোধ করে। ওই এলাকায় এমন দু-একটি পয়েন্ট ঘণ্টা কয়েক আটকে দিতে পারলেই ঢাকা-টাঙ্গাইল এবং ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে যানজট বাঁধিয়ে অনাসৃষ্টি ঘটানো যথেষ্ট। গায়ে পড়ে ঝগড়া বা গণ্ডগোল বাধানোর পাশাপাশি বিভিন্ন খাতে গত ক’দিন অশান্তির নতুন টোকা চলছে সমানে।

বিদ্যুৎ সেক্টরে মহাগণ্ডগোল প্রায় পাকিয়েই ফেলা হয়েছিল। একটু বিলম্বে হলেও সরকারের শক্ত অ্যাকশনে এবারের মতো রক্ষা মিলেছে। জ্বালানি ও খনিজসম্পদ উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খানের কড়া হুঁশিয়ারিতে কাজে ফিরেছে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কর্মীরা । কাজে যোগ না দিলে বিকল্প জনবল নিয়োগের হুঁশিয়ারিটি কাজে লেগেছে। দুর্নীতি ও নাশকতা চেষ্টার প্রমাণ পাওয়ায় গেলো সপ্তায় চাকরিচ্যুত করা হয় পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি ২৪ জনকে, আটক করা হয় বেশ কয়েকজনকে। চাকরিচ্যুতদের চাকরি পুনঃবহাল ও আটকদের মুক্তির দাবিতে কমপ্লিট শাটডাউন বা বিদ্যুৎ বন্ধের ঘোষণা দেয় তারা। কিন্তু নির্দিষ্ট সময় পার হওয়ার আগেই বিভিন্ন জায়গায় ৩ থেকে ৬ ঘণ্টা বিদ্যুৎ বন্ধ রাখে তারা। এমন বাস্তবতায় চরম অনিশ্চয়তায় পড়ে ৮০টি পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির প্রায় ৩ কোটি ৬০ লাখ গ্রাহক।

নৈরাজ্য পাকানোর কুশীলবদের গাঁথুনি নানান জায়গায়। বিভিন্ন মহলকে হরেক বায়না ও দাবিনামায় ব্যস্ত করে রাস্তায় নামিয়ে যাকে দিয়ে যেখানে সম্ভব ঘণ্ডগোল পাকাচ্ছে তারা। সরকারের দিক থেকে অ্যাকশন কড়া হলে লেজগুটিয়ে পালাচ্ছে দ্রুত। তবে, সরকারকে ব্যতিব্যস্ত রাখার কাজে শতভাগ সফল তারা।

বাস্তবে সরকারের এমন কঠোর বা বিপ্লবী হওয়ার দিন-সময় ফুরিয়ে গেছে। সেটা সম্ভব এবং সম্ভাবনার ছিল পয়লা রাতে বিড়াল মারার মতো ক্ষমতাগ্রহণের পরপরই। সরকার সেদিকে যায়নি। বিপ্লব পরবর্তীতে ক্ষমতায় আসা সরকার স্বভাবতই বিপ্লবী সরকার হলেও তা হয়নি। এ সরকারের চলন-বলন তুলনামূলক সুশীল ধাঁচের। কিন্তু, বেশিরভাগ মানুষেরই প্রত্যাশা সরকার কঠোর হোক।

নাবালক, সাবালক, মতলবাজ, উগ্রবাজ, প্রতিশোধবাজ, সুবিধাবাজদের তৎপরতা স্পষ্ট। এই চরিত্রের চক্র আগে করেছে ফ্রিস্টাইল। এখন করছে পেয়ে বসার ব্যবসা। তা দূরবীণ দিয়ে দেখার বিষয় নয়। খোলা চোখেই খোলাসা। গত দুই-আড়াই মাসে ব্যাংকে আমানত কমেছে ১১০০০ কোটি টাকার বেশি। তা অনেকটা স্বাভাবিক। কারণ ব্যাংকগুলোর সিংহভাগ জনসাধারণের আস্থা হারিয়েছে। জনগণ এখানে আমানত রাখতে ভয় পাচ্ছে আস্থাহীনতার কারণে। তা ব্যাংক, বীমা, গ্যাস, বিদ্যুৎ, বাজার, রাস্তাঘাট সবখানে-সব সেক্টরেই, যা নানা খাতে সংস্কারচেষ্টাকে মার খাইয়ে দিতে পারছে।

এমন একটা সময়ে উপদেষ্টা আসিফ শুনিয়েছেন কঠিন কথা। বলেছেন, ‘এই সরকার স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় ক্ষমতায় আসেনি। এটা একটা বিপ্লবী সরকার। ঊর্ধ্বতন সরকারি কর্মকর্তারা কথা না শুনলে, আইনে থাকুক, আর নাই থাকুক, তাদের চাকরি থেকে অব্যাহতি দেওয়া হবে’।

বাস্তবে সরকারের এমন কঠোর বা বিপ্লবী হওয়ার দিন-সময় ফুরিয়ে গেছে। সেটা সম্ভব এবং সম্ভাবনার ছিল পয়লা রাতে বিড়াল মারার মতো ক্ষমতাগ্রহণের পরপরই। সরকার সেদিকে যায়নি। বিপ্লব পরবর্তীতে ক্ষমতায় আসা সরকার স্বভাবতই বিপ্লবী সরকার হলেও তা হয়নি। এ সরকারের চলন-বলন তুলনামূলক সুশীল ধাঁচের। কিন্তু, বেশিরভাগ মানুষেরই প্রত্যাশা সরকার কঠোর হোক। বিপ্লবী অ্যাকশনে যাক। না অ্যাকশন না কোমল মধ্যমানের পদক্ষেপে সরকার দমনে না গিয়ে নিয়ন্ত্রণমূলক পদক্ষেপে এগোচ্ছে। এর অংশ হিসেবেই ডিম ও তেল আমদানিকারকদের ২০ ও পাঁচ শতাংশ হারে কর ছাড়। কিন্তু, কোনো আমদানিকারক বা সিন্ডিকেট সদস্যকে শাস্তি দেওয়ার তথ্য নেই।

পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্টদেরও একই প্রশ্ন। ২৮টি কোম্পানিক জেড ক্যাটাগরিতে পাঠানো হয়েছে। জেড ক্যাটাগরির সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান বিএসইসি ও কোম্পানির পরিচালককে শাস্তির আওতায় আনা হয়নি। এর মাঝে সুসংবাদ যোগ করেছেন অর্থ ও বাণিজ্য উপদেষ্টা ডক্টর সালেহউদ্দিন আহমেদ। জানিয়েছেন, পাচার হওয়া অর্থ ফেরাতে সর্বাত্মক চেষ্টায় কাজ শুরু করেছে সরকার। সচিবালয়ে সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত উপদেষ্টা কমিটির বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের কাছে তিনি বলেন, ডিমের মতো অন্য নিত্যপণ্যেরও দাম কমবে। এদিকে, বাংলাদেশ ব্যাংক জানিয়েছে, রেমিট্যান্সপ্রবাহ বাড়ায় গত সপ্তাহে থেকে প্রতিদিনই রিজার্ভের পরিমাণ বাড়ছে। মাঝেমধ্যে এ ধরনের খবরে আস্থার বারতা জোগায়।

লেখক: সাংবাদিক-কলামিস্ট; ডেপুটি হেড অব নিউজ, বাংলাভিশন।

এইচআর/ফারুক/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।