ঢাকা ০২:৪১ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৫, ৬ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞপ্তি/নোটিশ ::
সারাদেশে প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে... আগ্রহীরা সিভি মেইল করুন:  career@bdnewspost.com  ||   সারাদেশে প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে... আগ্রহীরা সিভি মেইল করুন:  career@bdnewspost.com  ||   সারাদেশে প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে... আগ্রহীরা সিভি মেইল করুন:  career@bdnewspost.com  ||   সারাদেশে প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে... আগ্রহীরা সিভি মেইল করুন:  career@bdnewspost.com  ||   সারাদেশে প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে... আগ্রহীরা সিভি মেইল করুন:  career@bdnewspost.com  ||   সারাদেশে প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে... আগ্রহীরা সিভি মেইল করুন:  career@bdnewspost.com  ||   সারাদেশে প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে... আগ্রহীরা সিভি মেইল করুন:  career@bdnewspost.com  ||   সারাদেশে প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে... আগ্রহীরা সিভি মেইল করুন:  career@bdnewspost.com  ||
সদ্য প্রাপ্ত খবর ::
আজ খুলনার প্রবীণ সাংবাদিক, লোক গবেষক ও অধ্যাপক গোলাম মোস্তফা সিন্দাইনী এর প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী bdnewspost.com Dakhil Math Query Resolution 2025 – Dakhil Math MCQ Query resolution 2025 PDF Obtain bdnewspost.com দাখিল গণিত পরীক্ষার প্রশ্ন ও সমাধান ২০২৫ PDF bdnewspost.com চুয়েটে ক্যাম্পাস রিক্রুটমেন্ট আয়োজন করেছে হুয়াওয়ে bdnewspost.com SSC English 2d Paper Query Solution 2025 – SSC English 2d Paper Query answer 2025 PDF Obtain bdnewspost.com এসএসসি ইংরেজি ২য় পত্র প্রশ্ন সমাধান ২০২৫ PDF সব বোর্ড ঢাকা, যশোর, চট্টগ্রাম, রাজশাহী, কুমিল্লা, দিনাজপুর, ময়মনসিংহ, বরিশাল ও সিলেট বোর্ড bdnewspost.com ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব ল্যাবরেটরী মেডিসিন এন্ড রেফারেল সেন্টার নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি ২০২৫ bdnewspost.com দাখিল আরবি ২য় পত্র পরীক্ষার প্রশ্ন ও সমাধান ২০২৫ PDF bdnewspost.com SSC English 1st Paper Query resolution 2025 – SSC English 1st Paper Query Resolution 2025 PDF Obtain All Board bdnewspost.com কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেট ঢাকা (পশ্চিম) নিয়োগ VAT Dhaka West Task Round 2025 bdnewspost.com

খাতুনগঞ্জের ব্যবসায় ‘ফ্যাক্টর’ এস আলম গ্রুপ, সরবরাহে ঘাটতি

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০৯:৪৩:১৩ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৫ অগাস্ট ২০২৪ ১৩৯ বার পড়া হয়েছে


এস আলমকেন্দ্রিক ৭টিসহ ৯ ব্যাংকের চেক নগদায়নে সমস্যা
বাড়ছে ভোজ্যতেল ও চিনির দাম

হাসিনা সরকারের পতনের পর পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জে তৈরি হয়েছে নানান ধরনের সংকট। অস্থিরতা তৈরি হয়েছে ভোগ্যপণ্য আমদানি ও সরবরাহে। বাজারের অন্যতম ‘ফ্যাক্টর’ হয়ে উঠেছে এস আলম গ্রুপ।

খাতুনগঞ্জের সবচেয়ে বেশি প্রভাবশালী শিল্পগ্রুপ এস আলম কোণঠাসা হয়ে পড়ায় সংকট আরও ঘণীভূত হচ্ছে। বিশেষ করে অ্যাকাউন্টে টাকা থাকা সত্ত্বেও এস আলমকেন্দ্রিক সাত ব্যাংকসহ নয়টি ব্যাংকে গ্রাহকদের চেক নগদায়ন হচ্ছে না বলে অভিযোগ। এতে দেশে ভোগ্যপণ্যের দ্বিতীয় বৃহৎ পাইকারি বাজারটির ব্যবসা একেবারে লাটে উঠতে চলেছে বলে দাবি ব্যবসায়ীদের।

ব্যবসায়ীরা বলছেন, সরকার দ্রুত ব্যাংকগুলোতে নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করে এসব ব্যাংকে রক্ষিত গ্রাহকদের জমা টাকার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। পাশাপাশি ব্যবসায়ীদের চাহিদা মতো চেক নগদায়নে পদক্ষেপ নিতে হবে। এজন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের হস্তক্ষেপ জরুরি।

খাতুনগঞ্জের ব্যবসায় ‘ফ্যাক্টর’ এস আলম গ্রুপ, সরবরাহে ঘাটতি

ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, সপ্তাহের ব্যবধানে খাতুনগঞ্জে ভোজ্যতেল ও চিনিতে প্রতি মণে ৮০-১০০ টাকা বেড়েছে। গত সপ্তাহে রেডি চিনি বিক্রি হয়েছিল ৪৩২০-৪৩৩০ টাকা। শনিবার (২৪ আগস্ট) বিক্রি হয়েছে ৪৪শ টাকা। একইভাবে গত সপ্তাহে পাম অয়েল বিক্রি হয়েছিল ৪৯৬০-৮০ টাকায়। শনিবার এসব পাম অয়েল বিক্রি হয় ৫০৮০-৯০ টাকায়। তবে পেঁয়াজ, আদা, গরম মসলাসহ অন্য সব পণ্যের দাম স্থিতিশীল।

খাতুনগঞ্জে ব্যবসা লাটে উঠেছে। কোনো বেচাকেনা নেই। মফস্বলে প্রায় সব জায়গায় পানি। মফস্বলের ব্যবসায়ীরা পণ্য কেনার জন্য খাতুনগঞ্জ আসছেন না। সামান্য কিছু পরিমাণে নিত্যপণ্য বিক্রি হচ্ছে।- ব্যবসায়ী সোলায়মান বাদশা

খাতুনগঞ্জের ইমাম শরীফ ব্রাদার্সের পরিচালক ছৈয়দুল হক জাগো নিউজকে বলেন, ‘বাজারে পণ্যের দাম ঠিক আছে। ভোজ্যতেলের দাম কিছু হেরফের হচ্ছে। কারণ এস আলমের মিল থেকে তেল ডেলিভারিতে সমস্যা হচ্ছে। এটির সুযোগ নিচ্ছে অন্য মিলগুলো।’

তিনি বলেন, ‘গত একমাস খাতুনগঞ্জে কোনো ব্যবসা হয়নি। এখন বন্যার কারণে বিক্রি একেবারে কম। পাশাপাশি এস আলমকেন্দ্রিক সাতটি ব্যাংকসহ নয়টি ব্যাংক গ্রাহকদের চেক নগদায়ন করতে সমস্যা করছে। এসব ব্যাংকে আমাদের হিসাবও রয়েছে। ওইসব অ্যাকাউন্টে আমাদের টাকা রয়েছে। কিন্তু ব্যাংকগুলো আমাদের চেক পাস করাচ্ছে না। এতে আমরা বিপাকে পড়েছি।’

আরও পড়ুন

খাতুনগঞ্জের তৈয়্যবিয়া ট্রেডার্সের স্বত্বাধিকারী সোলায়মান বাদশা জাগো নিউজকে বলেন, ‘খাতুনগঞ্জে ব্যবসা লাটে উঠেছে। কোনো বেচাকেনা নেই। মফস্বলে প্রায় সব জায়গায় পানি। মফস্বলের ব্যবসায়ীরা পণ্য কেনার জন্য খাতুনগঞ্জে আসছেন না। সামান্য কিছু পরিমাণে নিত্যপণ্য বিক্রি হচ্ছে।’

খাতুনগঞ্জের ব্যবসায় ‘ফ্যাক্টর’ এস আলম গ্রুপ, সরবরাহে ঘাটতি

তিনি বলেন, ‘কিছু বড় ব্যবসায়ী, যারা আমদানি করে বাজারে পণ্য সরবরাহ করেন কিংবা ঢাকা চট্টগ্রামের মিলারদের কাছ থেকে ডিও কিনে খাতুনগঞ্জের বাজারে বিক্রি করেন, তারা এস আলমকেন্দ্রিক ব্যাংকগুলোর চেক নিচ্ছেন না। তারা এসব ব্যাংকের চেক নগদায়ন নিয়ে ভয় করছেন। ফলে অন্য ব্যবসায়ীদের সমস্যায় পড়তে হচ্ছে।’

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ব্যবসায়ী বলেন, এস আলম গ্রুপের হেড অফিস আসাদগঞ্জে। পরিবহন ব্যবসা বাদে এস আলম গ্রুপের উত্থান খাতুনগঞ্জ দিয়েই। ফলে খাতুনগঞ্জের সঙ্গে এস আলম গ্রুপের প্রভাব অনেক বেশি। এস আলম গ্রুপ বিগত সময়ে বেশ কয়েকটি ব্যাংক নিয়ন্ত্রণ করেছে। এর মধ্যে ইসলামী ব্যাংক অন্যতম। এখানে ইসলামী ব্যাংকে হাজার হাজার ব্যবসায়ীর অ্যাকাউন্ট রয়েছে। এসব অ্যাকাউন্টে টাকাও আছে। তারপরেও এস আলম গ্রুপ কোণঠাসা হয়ে যাওয়ায় ইসলামী ব্যাংকের চেকও অনেকে নিচ্ছেন না। ফলে খাতুনগঞ্জের ব্যবসা কয়েকদিন ধরে সংকুচিত হয়ে পড়েছে।’

এস আলম গ্রুপ বাজারে থাকায় চট্টগ্রামে অনেক পণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণে ছিল। তাদের বিরুদ্ধে ব্যাংক দখল কিংবা ঋণ জালিয়াতির অভিযোগ থাকলেও চট্টগ্রামে কোনো পণ্যের সংকট হতে দিতো না। এখন এস আলম কোণঠাসা হয়ে পড়ায় অন্য মিলাররা সুযোগ নিতে শুরু করেছে। এতে বাজারে দামও বাড়ছে।- ব্যবসায়ী শাহজাহান বাহাদুর

আরেক ব্যবসায়ী বলেন, খাতুনগঞ্জে ভোজ্যতেল, চিনি বাদেও বেশ কয়েকটি ভোগ্যপণ্যের জোগান দিতো এস আলম। এখন বাংলাদেশ ব্যাংক এস আলম গ্রুপের ব্যাংকগুলোকে ঋণদান এবং এলসি (ঋণপত্র) খুলতে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার পর বাজারে এস আলমকেন্দ্রিক পণ্যগুলোর সরবরাহে সংকট তৈরি হচ্ছে। এতে গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে ভোজ্যতেল ও চিনির দাম বেড়েছে।

খাতুনগঞ্জের ব্যবসায়ী শাহজাহান বাহাদুর জাগো নিউজকে বলেন, ‘খাতুনগঞ্জে বড় পাঁচশ ব্যবসায়ী থাকলে কয়েক হাজার রয়েছে ছোট ডিও ব্যবসায়ী। এখানে ডিও হাতবদল হয়ে ব্যবসা হয়। যাকে বাজারে ট্রেডিং বিজনেস বলে। গত একমাসে ট্রেডিং একেবারেই হচ্ছে না বলে চলে। এতে ছোট ছোট হাজারের অধিক ব্যবসায়ী ক্ষতির শিকার হচ্ছেন।’

খাতুনগঞ্জের ব্যবসায় ‘ফ্যাক্টর’ এস আলম গ্রুপ, সরবরাহে ঘাটতি

তিনি বলেন, ‘এস আলম গ্রুপ বাজারে থাকায় চট্টগ্রামে অনেক পণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণে ছিল। তাদের বিরুদ্ধে ব্যাংক দখল কিংবা ঋণ জালিয়াতির অভিযোগ থাকলেও চট্টগ্রামে কোনো পণ্যের সংকট হতে দিতো না। বিশেষ করে ভোজ্যতেল ও চিনির ক্ষেত্রে এস আলমের তেল-চিনির দাম ঢাকার মিলারদের চেয়ে ৫০-১০০ টাকা সব সময় কম থাকতো। এখন এস আলম কোণঠাসা হয়ে পড়ায় অন্য মিলাররা সুযোগ নিতে শুরু করেছে। এতে বাজারে দামও বাড়ছে।’

এ বিষয়ে কথা হয় খাতুনগঞ্জের এক ব্যবসায়ী নেতার সঙ্গে। তিনি নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘খাতুনগঞ্জের কোনো ব্যবসায়ী নেতা এই মুহূর্তে এস আলম গ্রুপের বিপক্ষে কথা বলবে না। কারণ এখনো খাতুনগঞ্জের অসংখ্য ব্যবসায়ীর সঙ্গে এস আলম গ্রুপের ব্যবসা রয়েছে। ইসলামী ব্যাংক কিংবা সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংকে আপাতত বাংলাদেশ ব্যাংক হস্তক্ষেপ করলেও ফার্স্ট সিকিউরিটি ব্যাংক, ইউনিয়ন ব্যাংক, কমার্স ব্যাংক, গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংকে এখনো পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণ রয়েছে এস আলমের। আবার পদ্মা ব্যাংক এবং ন্যাশনাল ব্যাংকের চেক নিয়েও সমস্যা হচ্ছে। এসব ব্যাংকে খাতুনগঞ্জের ব্যবসায়ীদের শত শত কোটি টাকার আমানত ও ব্যবসা রয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘এখন যেহেতু ব্যাংকগুলোতে ব্যবসায়ীদের অ্যাকাউন্ট রয়েছে। অ্যাকাউন্টগুলোতে ব্যবসায়ীদের জমা টাকাও রয়েছে। এসব অ্যাকাউন্টের বিপরীতে ব্যবসায়ীদের দেওয়া চেকগুলো যাতে নগদায়ন হয়, সেজন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া উচিত। না হলে খাতুনগঞ্জের ব্যবসা আরও সংকুচিত হয়ে পড়বে।’

এ বিষয়ে ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক লিমিটেড চট্টগ্রাম জোনাল হেড কামাল উদ্দীন এবং ইউনিয়ন ব্যাংক লিমিটেড খাতুনগঞ্জ শাখা ব্যবস্থাপক জহুরুল ইসলামকে একাধিকবার ফোন করা হলেও তারা রিসিভ করেননি।

এমডিআইএইচ/এএসএ/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।


নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য
ট্যাগস :

খাতুনগঞ্জের ব্যবসায় ‘ফ্যাক্টর’ এস আলম গ্রুপ, সরবরাহে ঘাটতি

আপডেট সময় : ০৯:৪৩:১৩ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৫ অগাস্ট ২০২৪


এস আলমকেন্দ্রিক ৭টিসহ ৯ ব্যাংকের চেক নগদায়নে সমস্যা
বাড়ছে ভোজ্যতেল ও চিনির দাম

হাসিনা সরকারের পতনের পর পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জে তৈরি হয়েছে নানান ধরনের সংকট। অস্থিরতা তৈরি হয়েছে ভোগ্যপণ্য আমদানি ও সরবরাহে। বাজারের অন্যতম ‘ফ্যাক্টর’ হয়ে উঠেছে এস আলম গ্রুপ।

খাতুনগঞ্জের সবচেয়ে বেশি প্রভাবশালী শিল্পগ্রুপ এস আলম কোণঠাসা হয়ে পড়ায় সংকট আরও ঘণীভূত হচ্ছে। বিশেষ করে অ্যাকাউন্টে টাকা থাকা সত্ত্বেও এস আলমকেন্দ্রিক সাত ব্যাংকসহ নয়টি ব্যাংকে গ্রাহকদের চেক নগদায়ন হচ্ছে না বলে অভিযোগ। এতে দেশে ভোগ্যপণ্যের দ্বিতীয় বৃহৎ পাইকারি বাজারটির ব্যবসা একেবারে লাটে উঠতে চলেছে বলে দাবি ব্যবসায়ীদের।

ব্যবসায়ীরা বলছেন, সরকার দ্রুত ব্যাংকগুলোতে নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করে এসব ব্যাংকে রক্ষিত গ্রাহকদের জমা টাকার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। পাশাপাশি ব্যবসায়ীদের চাহিদা মতো চেক নগদায়নে পদক্ষেপ নিতে হবে। এজন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের হস্তক্ষেপ জরুরি।

খাতুনগঞ্জের ব্যবসায় ‘ফ্যাক্টর’ এস আলম গ্রুপ, সরবরাহে ঘাটতি

ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, সপ্তাহের ব্যবধানে খাতুনগঞ্জে ভোজ্যতেল ও চিনিতে প্রতি মণে ৮০-১০০ টাকা বেড়েছে। গত সপ্তাহে রেডি চিনি বিক্রি হয়েছিল ৪৩২০-৪৩৩০ টাকা। শনিবার (২৪ আগস্ট) বিক্রি হয়েছে ৪৪শ টাকা। একইভাবে গত সপ্তাহে পাম অয়েল বিক্রি হয়েছিল ৪৯৬০-৮০ টাকায়। শনিবার এসব পাম অয়েল বিক্রি হয় ৫০৮০-৯০ টাকায়। তবে পেঁয়াজ, আদা, গরম মসলাসহ অন্য সব পণ্যের দাম স্থিতিশীল।

খাতুনগঞ্জে ব্যবসা লাটে উঠেছে। কোনো বেচাকেনা নেই। মফস্বলে প্রায় সব জায়গায় পানি। মফস্বলের ব্যবসায়ীরা পণ্য কেনার জন্য খাতুনগঞ্জ আসছেন না। সামান্য কিছু পরিমাণে নিত্যপণ্য বিক্রি হচ্ছে।- ব্যবসায়ী সোলায়মান বাদশা

খাতুনগঞ্জের ইমাম শরীফ ব্রাদার্সের পরিচালক ছৈয়দুল হক জাগো নিউজকে বলেন, ‘বাজারে পণ্যের দাম ঠিক আছে। ভোজ্যতেলের দাম কিছু হেরফের হচ্ছে। কারণ এস আলমের মিল থেকে তেল ডেলিভারিতে সমস্যা হচ্ছে। এটির সুযোগ নিচ্ছে অন্য মিলগুলো।’

তিনি বলেন, ‘গত একমাস খাতুনগঞ্জে কোনো ব্যবসা হয়নি। এখন বন্যার কারণে বিক্রি একেবারে কম। পাশাপাশি এস আলমকেন্দ্রিক সাতটি ব্যাংকসহ নয়টি ব্যাংক গ্রাহকদের চেক নগদায়ন করতে সমস্যা করছে। এসব ব্যাংকে আমাদের হিসাবও রয়েছে। ওইসব অ্যাকাউন্টে আমাদের টাকা রয়েছে। কিন্তু ব্যাংকগুলো আমাদের চেক পাস করাচ্ছে না। এতে আমরা বিপাকে পড়েছি।’

আরও পড়ুন

খাতুনগঞ্জের তৈয়্যবিয়া ট্রেডার্সের স্বত্বাধিকারী সোলায়মান বাদশা জাগো নিউজকে বলেন, ‘খাতুনগঞ্জে ব্যবসা লাটে উঠেছে। কোনো বেচাকেনা নেই। মফস্বলে প্রায় সব জায়গায় পানি। মফস্বলের ব্যবসায়ীরা পণ্য কেনার জন্য খাতুনগঞ্জে আসছেন না। সামান্য কিছু পরিমাণে নিত্যপণ্য বিক্রি হচ্ছে।’

খাতুনগঞ্জের ব্যবসায় ‘ফ্যাক্টর’ এস আলম গ্রুপ, সরবরাহে ঘাটতি

তিনি বলেন, ‘কিছু বড় ব্যবসায়ী, যারা আমদানি করে বাজারে পণ্য সরবরাহ করেন কিংবা ঢাকা চট্টগ্রামের মিলারদের কাছ থেকে ডিও কিনে খাতুনগঞ্জের বাজারে বিক্রি করেন, তারা এস আলমকেন্দ্রিক ব্যাংকগুলোর চেক নিচ্ছেন না। তারা এসব ব্যাংকের চেক নগদায়ন নিয়ে ভয় করছেন। ফলে অন্য ব্যবসায়ীদের সমস্যায় পড়তে হচ্ছে।’

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ব্যবসায়ী বলেন, এস আলম গ্রুপের হেড অফিস আসাদগঞ্জে। পরিবহন ব্যবসা বাদে এস আলম গ্রুপের উত্থান খাতুনগঞ্জ দিয়েই। ফলে খাতুনগঞ্জের সঙ্গে এস আলম গ্রুপের প্রভাব অনেক বেশি। এস আলম গ্রুপ বিগত সময়ে বেশ কয়েকটি ব্যাংক নিয়ন্ত্রণ করেছে। এর মধ্যে ইসলামী ব্যাংক অন্যতম। এখানে ইসলামী ব্যাংকে হাজার হাজার ব্যবসায়ীর অ্যাকাউন্ট রয়েছে। এসব অ্যাকাউন্টে টাকাও আছে। তারপরেও এস আলম গ্রুপ কোণঠাসা হয়ে যাওয়ায় ইসলামী ব্যাংকের চেকও অনেকে নিচ্ছেন না। ফলে খাতুনগঞ্জের ব্যবসা কয়েকদিন ধরে সংকুচিত হয়ে পড়েছে।’

এস আলম গ্রুপ বাজারে থাকায় চট্টগ্রামে অনেক পণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণে ছিল। তাদের বিরুদ্ধে ব্যাংক দখল কিংবা ঋণ জালিয়াতির অভিযোগ থাকলেও চট্টগ্রামে কোনো পণ্যের সংকট হতে দিতো না। এখন এস আলম কোণঠাসা হয়ে পড়ায় অন্য মিলাররা সুযোগ নিতে শুরু করেছে। এতে বাজারে দামও বাড়ছে।- ব্যবসায়ী শাহজাহান বাহাদুর

আরেক ব্যবসায়ী বলেন, খাতুনগঞ্জে ভোজ্যতেল, চিনি বাদেও বেশ কয়েকটি ভোগ্যপণ্যের জোগান দিতো এস আলম। এখন বাংলাদেশ ব্যাংক এস আলম গ্রুপের ব্যাংকগুলোকে ঋণদান এবং এলসি (ঋণপত্র) খুলতে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার পর বাজারে এস আলমকেন্দ্রিক পণ্যগুলোর সরবরাহে সংকট তৈরি হচ্ছে। এতে গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে ভোজ্যতেল ও চিনির দাম বেড়েছে।

খাতুনগঞ্জের ব্যবসায়ী শাহজাহান বাহাদুর জাগো নিউজকে বলেন, ‘খাতুনগঞ্জে বড় পাঁচশ ব্যবসায়ী থাকলে কয়েক হাজার রয়েছে ছোট ডিও ব্যবসায়ী। এখানে ডিও হাতবদল হয়ে ব্যবসা হয়। যাকে বাজারে ট্রেডিং বিজনেস বলে। গত একমাসে ট্রেডিং একেবারেই হচ্ছে না বলে চলে। এতে ছোট ছোট হাজারের অধিক ব্যবসায়ী ক্ষতির শিকার হচ্ছেন।’

খাতুনগঞ্জের ব্যবসায় ‘ফ্যাক্টর’ এস আলম গ্রুপ, সরবরাহে ঘাটতি

তিনি বলেন, ‘এস আলম গ্রুপ বাজারে থাকায় চট্টগ্রামে অনেক পণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণে ছিল। তাদের বিরুদ্ধে ব্যাংক দখল কিংবা ঋণ জালিয়াতির অভিযোগ থাকলেও চট্টগ্রামে কোনো পণ্যের সংকট হতে দিতো না। বিশেষ করে ভোজ্যতেল ও চিনির ক্ষেত্রে এস আলমের তেল-চিনির দাম ঢাকার মিলারদের চেয়ে ৫০-১০০ টাকা সব সময় কম থাকতো। এখন এস আলম কোণঠাসা হয়ে পড়ায় অন্য মিলাররা সুযোগ নিতে শুরু করেছে। এতে বাজারে দামও বাড়ছে।’

এ বিষয়ে কথা হয় খাতুনগঞ্জের এক ব্যবসায়ী নেতার সঙ্গে। তিনি নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘খাতুনগঞ্জের কোনো ব্যবসায়ী নেতা এই মুহূর্তে এস আলম গ্রুপের বিপক্ষে কথা বলবে না। কারণ এখনো খাতুনগঞ্জের অসংখ্য ব্যবসায়ীর সঙ্গে এস আলম গ্রুপের ব্যবসা রয়েছে। ইসলামী ব্যাংক কিংবা সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংকে আপাতত বাংলাদেশ ব্যাংক হস্তক্ষেপ করলেও ফার্স্ট সিকিউরিটি ব্যাংক, ইউনিয়ন ব্যাংক, কমার্স ব্যাংক, গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংকে এখনো পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণ রয়েছে এস আলমের। আবার পদ্মা ব্যাংক এবং ন্যাশনাল ব্যাংকের চেক নিয়েও সমস্যা হচ্ছে। এসব ব্যাংকে খাতুনগঞ্জের ব্যবসায়ীদের শত শত কোটি টাকার আমানত ও ব্যবসা রয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘এখন যেহেতু ব্যাংকগুলোতে ব্যবসায়ীদের অ্যাকাউন্ট রয়েছে। অ্যাকাউন্টগুলোতে ব্যবসায়ীদের জমা টাকাও রয়েছে। এসব অ্যাকাউন্টের বিপরীতে ব্যবসায়ীদের দেওয়া চেকগুলো যাতে নগদায়ন হয়, সেজন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া উচিত। না হলে খাতুনগঞ্জের ব্যবসা আরও সংকুচিত হয়ে পড়বে।’

এ বিষয়ে ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক লিমিটেড চট্টগ্রাম জোনাল হেড কামাল উদ্দীন এবং ইউনিয়ন ব্যাংক লিমিটেড খাতুনগঞ্জ শাখা ব্যবস্থাপক জহুরুল ইসলামকে একাধিকবার ফোন করা হলেও তারা রিসিভ করেননি।

এমডিআইএইচ/এএসএ/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।