ঢাকা ০৪:৩০ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৫, ১৩ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞপ্তি/নোটিশ ::
সারাদেশে প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে... আগ্রহীরা সিভি মেইল করুন:  career@bdnewspost.com  ||   সারাদেশে প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে... আগ্রহীরা সিভি মেইল করুন:  career@bdnewspost.com  ||   সারাদেশে প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে... আগ্রহীরা সিভি মেইল করুন:  career@bdnewspost.com  ||   সারাদেশে প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে... আগ্রহীরা সিভি মেইল করুন:  career@bdnewspost.com  ||   সারাদেশে প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে... আগ্রহীরা সিভি মেইল করুন:  career@bdnewspost.com  ||   সারাদেশে প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে... আগ্রহীরা সিভি মেইল করুন:  career@bdnewspost.com  ||   সারাদেশে প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে... আগ্রহীরা সিভি মেইল করুন:  career@bdnewspost.com  ||   সারাদেশে প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে... আগ্রহীরা সিভি মেইল করুন:  career@bdnewspost.com  ||
সদ্য প্রাপ্ত খবর ::
দাখিল ইংরেজি ১ম পত্র প্রশ্ন সমাধান ২০২৪ PDF মাদ্রাসা বোর্ড bdnewspost.com জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিএড অনার্স দ্বিতীয় বর্ষ ৪র্থ সেমিষ্টার পরীক্ষার ফরম পূরণ বিজ্ঞপ্তি ২০২৫ bdnewspost.com দাখিল আকাইদ ও ফিকহ পরীক্ষার প্রশ্ন ও সমাধান ২০২৫ PDF bdnewspost.com এসএসসি কৃষি শিক্ষা বহুনির্বাচনি প্রশ্ন সমাধান ২০২৫ [ক,খ,গ ও ঘ সেট সব বোর্ড] – এসএসসি কৃষি শিক্ষা MCQ সমাধান 2025 PDF bdnewspost.com SSC Agriculture Research MCQ Query resolution 2025 – Krishi Shikkha Query & Solution 2025 All Board PDF bdnewspost.com বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রন কর্তৃপক্ষ নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি IDRA Activity Round 2025 bdnewspost.com রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি EPB Task Round 2025 bdnewspost.com এসএসসি গার্হস্থ্য বিজ্ঞান বহুনির্বাচনি প্রশ্ন সমাধান ২০২৫ [ক,খ,গ ও ঘ সেট সব বোর্ড] – এসএসসি গার্হস্থ্য বিজ্ঞান MCQ সমাধান 2025 PDF bdnewspost.com পাওয়ার গ্রীড কোম্পানী অব বাংলাদেশ লিমিটেড নিয়োগ PGCB Process Round 2025 bdnewspost.com SSC House Science MCQ Query answer 2025 – Garostho Biggan Query & Resolution 2025 All Board PDF bdnewspost.com

৮১ শতাংশ মানুষ সংস্কার সম্পন্ন পর্যন্ত

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০৮:৩৩:১৩ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ৭৭ বার পড়া হয়েছে


ঢাকা: দেশের শতকরা ৮১ ভাগ মানুষ বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে দলীয় ছাত্ররাজনীতি এবং ৮৪ ভাগ মানুষ দলীয় শিক্ষক রাজনীতি নিষিদ্ধ চেয়েছেন।  

ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্র্যাক ইনস্টিটিউট অব গভর্নেন্স অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের (বিআইজিডি) একটি জরিপে এমন তথ্য উঠে এসেছে।

‘পালস সার্ভে ২০২৪ : জনগণের মতামত অভিজ্ঞতা ও প্রত্যাশা’ শীর্ষক জরিপটি গত ২২ আগস্ট থেকে ২ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত করা হয়েছে।  

এতে অন্তর্বর্তী সরকার সংস্কার সম্পন্ন করার জন্য যতদিন প্রয়োজন ততদিন ক্ষমতায় থাকুক বলে মত দিয়েছেন ৮১ ভাগ মানুষ। অন্যদিকে ১৩ শতাংশ মানুষ মনে করেন অতিদ্রুত নির্বাচন দিয়ে ক্ষমতা ছেড়ে দেওয়া উচিত।

রোববার (১৫ সেপ্টেম্বর) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মোজাফফর আহমেদ চৌধুরী মিলনায়তনে বিআইজিডির উদ্যোগে ‘অভ্যুত্থানের চল্লিশ দিন: মানুষ কি ভাবছে?’ শীর্ষক সভায় ইনস্টিটিউটের সিনিয়র রিসার্চ ফেলো মির্জা এম. হাসান জরিপের তথ্যগুলো তুলে ধরেন।

জরিপের ফলাফল তুলে ধরার পর প্যানেল আলোচনায় অংশ নেন সুশাসনের জন্য নাগরিকের সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক সামিনা লুৎফা ও উন্নয়ন অধ্যয়ন বিভাগের শিক্ষক আসিফ মোহাম্মদ শাহান, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের লিয়াজোঁ কমিটির সদস্য মামুন আব্দুল্লাহিল ও ভূঁইয়া আসাদুজ্জামান, জাতীয় নাগরিক কমিটির মুখপাত্র সামান্তা শারমীন, বিআইজিডির নির্বাহী পরিচালক ইমরান মতিন।

জরিপে উঠে আসে, ৩৮ শতাংশ মানুষ মনে করে অন্তর্বর্তী সরকার তিন বছর বা তার বেশি সময় থাকা উচিত; ৯ শতাংশ দুই বছর; ৩৫ শতাংশ মানুষ এক বছর বা তার সময় থাকা উচিত বলে মনে করেন। জরিপে অংশ নেওয়া ৭১ ভাগ মানুষ মনে করেন রাজনৈতিকভাবে বাংলাদেশ সঠিক দিকে যাচ্ছে; অর্থনীতি সঠিক দিকে যাচ্ছে মনে করেন ৬০ ভাগ মানুষ।

দেশের সিংহভাগ- ৪০ ভাগ মানুষ মনে করেন দেশের প্রধান সমস্যা অর্থনৈতিক (মুদ্রাস্ফীতি/ব্যবসায়িক অস্থিতিশীলতা), ১৫ শতাংশ বন্যাকে, ১৩ শতাংশ রাজনৈতিক অস্থিরতা আর ৭ শতাংশ ল অ্যান্ড অর্ডারের অবনতিকে প্রধান সমস্যা হিসেবে চিহ্নিত করেছেন।

জরিপের ফলাফল অনুযায়ী, দেশের ৭২ দশমিক ২ শতাংশ মানুষ মনে করেন সাধারণ সময়ের তুলনায় আগস্ট মাসে অপরাধ বাড়েনি, ২৫ শতাংশ মনে করেন সাধারণ সময়ের তুলনায় অপরাধ বেড়েছে; আগস্ট মাসে সাধারণ সময়ের তুলনায় সহিংসতা বাড়েনি মনে করেন ৭৫ শতাংশ মানুষ, বিপরীতে ২৩ শতাংশ সহিংসতা বেড়েছে মনে করেন।

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষকদের দলীয় রাজনীতি নিষিদ্ধের পক্ষে ৮৪ শতাংশ মানুষ মতামত দিয়েছেন; বিপক্ষে মত দিয়েছেন ৯ দশমিক ৬ শতাংশ মানুষ। অন্যদিকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ করাকে সমর্থন করেন ৮১ ভাগ মানুষ; সমর্থন করেন না ১৪ শতাংশ মানুষ।   

আলোচনায় অংশ নিয়ে অন্তর্বর্তী সরকার ঘোষিত নির্বাচন সংস্কার কমিশনের প্রধান বদিউল আলম মজুমদার বলেন, নির্বাচন কমিশন দল নিরপেক্ষ হতে হবে। নির্বাচন কমিশনার নিয়োগের জন্য আইন আছে, যেটা ২০২২ সালে করা। এর মাধ্যমে সরকার যাকে চায়, তারাই কমিশনার হন। তারা হয় অনুগ্রহ দুষ্ট অথবা পক্ষপাতদুষ্ট; এভাবে হয়ে আসছে। এরা সরকারের অ্যাজেন্ডা বাস্তবায়ন করে।

তিনি বলেন, এখনও দাপ্তরিকভাবে কমিশন হয়নি তবে আমাদের দীর্ঘদিনের অভিজ্ঞতায় কিছু ভাবনা জানাচ্ছি। কমিশনার নিয়োগ প্রক্রিয়া হবে অনুসন্ধান কমিটির মাধ্যমে। এই কমিটি হবে ইনক্লুসিভ। এতে প্রধানমন্ত্রী, বিরোধী দল, তৃতীয় বৃহত্তম দল, নাগরিক সমাজের প্রতিনিধি, তরুণ প্রতিনিধি, নারীদের প্রতিনিধি থাকতে পারে।

বদিউল আলম মজুমদার বলেন, এর আগেও আমরা গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) সকল দলের ঐক্যমত্যের ভিত্তিতে হয়েছে তবে পরবর্তী সময়ে সেটি রাজনৈতিক দলগুলো অনুসরণ করেনি। ফলে আমরা সংস্কার করছি কিন্তু এটি যদি ফলাফল না দেয়, তাহলে লাভ নেই। তাই কমিশন গঠন হলে আমরা অনেকের মতামত নেব। এর মাধ্যমে সংস্কার সুপারিশকে আমরা প্রতিনিধিত্বমূলক করতে চেষ্টা করব।

তিনি আরও বলেন, যে সংস্কারের কথা বলা হচ্ছে সেটি ১/১১ এর পরে বাস্তবায়ন হলে এই পরিস্থিতির সৃষ্টি হত না। কাজেই সংস্কার বললেই হবে না, সেটি আলোর মুখ দেখতে হবে। আমরা পরিবর্তন চাচ্ছি তবে আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তন হচ্ছে কিনা সেটাও গুরুত্বপূর্ণ। সংস্কারের পাশাপাশি যারা অন্যায় করেছে, নির্বাচনী অপরাধ করেছে বিচার হতে হবে। অন্যায় করে পার পেয়ে গেলে হবে না।

সামিনা লুৎফা বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন থেকে বৈষম্য দূরীকরণ করে ইনক্লুসিভ বাংলাদেশ করার কথা বলা হচ্ছে। তবে কোথায় বৈষম্যহীন বা ইনক্লুসিভের মধ্যে কারা আছেন—সেই জায়গাটি পরিষ্কার নয় জনমানুষের কাছে। ইনক্লুসিভ বলতে কাকে বুঝব, মাজার কী বাদ, শেখ হাসিনা চলে গেছে, বাকিরা তো আছে। তাদের ব্যাপারে কী ভাবনা সেটাও বলতে হবে।

মামুন আবদুল্লাহিল বলেন, জরিপ অনুযায়ী সরকারের প্রতি এখনও জনমানুষ আস্থাশীল। মানুষের আশা এবং হতাশা যে কোনো সময় আসতে পারে। কমিটমেন্ট যথাযোগ্যভাবে অ্যাড্রেস করতে না পারলে আস্থা আর থাকবে না।

তিনি বলেন, সংস্কার দাবি ছাত্রদের থেকে তোলা হয়েছে, তবে সংস্কার কমিশনগুলোতে ছাত্রদের প্রতিনিধিত্ব না রাখার সমালোচনা করেন তিনি। তিনি বাঙালি এবং আদিবাসী দুই কমিউনিটিকে বাম বা অন্যান্য ঘরানার রাজনৈতিক দলের বাইরে এসে নিজেদের মধ্যে সংলাপের মাধ্যমে পরস্পর সমস্যা-ভুল বোঝাবুঝি দূর করতে হবে বলে মন্তব্য করেন তিনি।

আওয়ামী লীগের পরিচ্ছন্ন ব্যক্তিদের মাধ্যমে নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে কিনা এমন প্রশ্নে  আসাদুজ্জামান বলেন, গণহত্যার যে ঘটনাটি ঘটেছে। ফেয়ার ট্রায়ালের মাধ্যমে তার বিচার হতে হবে তারপর তাদের সঙ্গে সংলাপ। আগে তাদের বিচার বা ক্ষমার বিষয়, পরে অন্য কিছু। তবে যে কোনো ধরনের ট্রায়াল আমরা চাই না। এটি ফেয়ার হতে হবে। ট্রাইব্যুনাল প্রশ্নবিদ্ধ হলে সংলাপ অনিশ্চিত হয়ে যাবে।

জরিপে ফোনে দেশের ৬৪ জেলার ৪ হাজার ৭৭৩ জনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। এরমধ্যে ২ হাজার ৩৬৩ জনের জরিপ করা হয়েছে, যা মোট নমুনার ৪৯ শতাংশ। এরমধ্যে নারী পুরুষের অনুপাত ৪৩ : ৫৭। উত্তরদাতাদের ৬৭ শতাংশ গ্রামের এবং ৩৩ শতাংশ শহরের বাসিন্দা। বিআইজিডির পূর্বের চারটি ভিন্ন গবেষণা থেকে নমুনা নেওয়া হয়েছে। সেগুলো হলো – এশিয়া ফাউন্ডেশন ও বিআইজিডি সার্ভে ২০২৪, ইয়ুথ সার্ভে ২০২১, মাদরাসা সার্ভে ২০২০ এবং ছাত্র পোল ২০২৪। এতে সমাজের নিম্নবিত্ত মধ্যবিত্ত উচ্চবিত্তের নানা পেশার মানুষকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ০৮২৩ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৬, ২০২৪
এসএএইচ




নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য
ট্যাগস :

৮১ শতাংশ মানুষ সংস্কার সম্পন্ন পর্যন্ত

আপডেট সময় : ০৮:৩৩:১৩ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪


ঢাকা: দেশের শতকরা ৮১ ভাগ মানুষ বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে দলীয় ছাত্ররাজনীতি এবং ৮৪ ভাগ মানুষ দলীয় শিক্ষক রাজনীতি নিষিদ্ধ চেয়েছেন।  

ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্র্যাক ইনস্টিটিউট অব গভর্নেন্স অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের (বিআইজিডি) একটি জরিপে এমন তথ্য উঠে এসেছে।

‘পালস সার্ভে ২০২৪ : জনগণের মতামত অভিজ্ঞতা ও প্রত্যাশা’ শীর্ষক জরিপটি গত ২২ আগস্ট থেকে ২ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত করা হয়েছে।  

এতে অন্তর্বর্তী সরকার সংস্কার সম্পন্ন করার জন্য যতদিন প্রয়োজন ততদিন ক্ষমতায় থাকুক বলে মত দিয়েছেন ৮১ ভাগ মানুষ। অন্যদিকে ১৩ শতাংশ মানুষ মনে করেন অতিদ্রুত নির্বাচন দিয়ে ক্ষমতা ছেড়ে দেওয়া উচিত।

রোববার (১৫ সেপ্টেম্বর) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মোজাফফর আহমেদ চৌধুরী মিলনায়তনে বিআইজিডির উদ্যোগে ‘অভ্যুত্থানের চল্লিশ দিন: মানুষ কি ভাবছে?’ শীর্ষক সভায় ইনস্টিটিউটের সিনিয়র রিসার্চ ফেলো মির্জা এম. হাসান জরিপের তথ্যগুলো তুলে ধরেন।

জরিপের ফলাফল তুলে ধরার পর প্যানেল আলোচনায় অংশ নেন সুশাসনের জন্য নাগরিকের সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক সামিনা লুৎফা ও উন্নয়ন অধ্যয়ন বিভাগের শিক্ষক আসিফ মোহাম্মদ শাহান, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের লিয়াজোঁ কমিটির সদস্য মামুন আব্দুল্লাহিল ও ভূঁইয়া আসাদুজ্জামান, জাতীয় নাগরিক কমিটির মুখপাত্র সামান্তা শারমীন, বিআইজিডির নির্বাহী পরিচালক ইমরান মতিন।

জরিপে উঠে আসে, ৩৮ শতাংশ মানুষ মনে করে অন্তর্বর্তী সরকার তিন বছর বা তার বেশি সময় থাকা উচিত; ৯ শতাংশ দুই বছর; ৩৫ শতাংশ মানুষ এক বছর বা তার সময় থাকা উচিত বলে মনে করেন। জরিপে অংশ নেওয়া ৭১ ভাগ মানুষ মনে করেন রাজনৈতিকভাবে বাংলাদেশ সঠিক দিকে যাচ্ছে; অর্থনীতি সঠিক দিকে যাচ্ছে মনে করেন ৬০ ভাগ মানুষ।

দেশের সিংহভাগ- ৪০ ভাগ মানুষ মনে করেন দেশের প্রধান সমস্যা অর্থনৈতিক (মুদ্রাস্ফীতি/ব্যবসায়িক অস্থিতিশীলতা), ১৫ শতাংশ বন্যাকে, ১৩ শতাংশ রাজনৈতিক অস্থিরতা আর ৭ শতাংশ ল অ্যান্ড অর্ডারের অবনতিকে প্রধান সমস্যা হিসেবে চিহ্নিত করেছেন।

জরিপের ফলাফল অনুযায়ী, দেশের ৭২ দশমিক ২ শতাংশ মানুষ মনে করেন সাধারণ সময়ের তুলনায় আগস্ট মাসে অপরাধ বাড়েনি, ২৫ শতাংশ মনে করেন সাধারণ সময়ের তুলনায় অপরাধ বেড়েছে; আগস্ট মাসে সাধারণ সময়ের তুলনায় সহিংসতা বাড়েনি মনে করেন ৭৫ শতাংশ মানুষ, বিপরীতে ২৩ শতাংশ সহিংসতা বেড়েছে মনে করেন।

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষকদের দলীয় রাজনীতি নিষিদ্ধের পক্ষে ৮৪ শতাংশ মানুষ মতামত দিয়েছেন; বিপক্ষে মত দিয়েছেন ৯ দশমিক ৬ শতাংশ মানুষ। অন্যদিকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ করাকে সমর্থন করেন ৮১ ভাগ মানুষ; সমর্থন করেন না ১৪ শতাংশ মানুষ।   

আলোচনায় অংশ নিয়ে অন্তর্বর্তী সরকার ঘোষিত নির্বাচন সংস্কার কমিশনের প্রধান বদিউল আলম মজুমদার বলেন, নির্বাচন কমিশন দল নিরপেক্ষ হতে হবে। নির্বাচন কমিশনার নিয়োগের জন্য আইন আছে, যেটা ২০২২ সালে করা। এর মাধ্যমে সরকার যাকে চায়, তারাই কমিশনার হন। তারা হয় অনুগ্রহ দুষ্ট অথবা পক্ষপাতদুষ্ট; এভাবে হয়ে আসছে। এরা সরকারের অ্যাজেন্ডা বাস্তবায়ন করে।

তিনি বলেন, এখনও দাপ্তরিকভাবে কমিশন হয়নি তবে আমাদের দীর্ঘদিনের অভিজ্ঞতায় কিছু ভাবনা জানাচ্ছি। কমিশনার নিয়োগ প্রক্রিয়া হবে অনুসন্ধান কমিটির মাধ্যমে। এই কমিটি হবে ইনক্লুসিভ। এতে প্রধানমন্ত্রী, বিরোধী দল, তৃতীয় বৃহত্তম দল, নাগরিক সমাজের প্রতিনিধি, তরুণ প্রতিনিধি, নারীদের প্রতিনিধি থাকতে পারে।

বদিউল আলম মজুমদার বলেন, এর আগেও আমরা গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) সকল দলের ঐক্যমত্যের ভিত্তিতে হয়েছে তবে পরবর্তী সময়ে সেটি রাজনৈতিক দলগুলো অনুসরণ করেনি। ফলে আমরা সংস্কার করছি কিন্তু এটি যদি ফলাফল না দেয়, তাহলে লাভ নেই। তাই কমিশন গঠন হলে আমরা অনেকের মতামত নেব। এর মাধ্যমে সংস্কার সুপারিশকে আমরা প্রতিনিধিত্বমূলক করতে চেষ্টা করব।

তিনি আরও বলেন, যে সংস্কারের কথা বলা হচ্ছে সেটি ১/১১ এর পরে বাস্তবায়ন হলে এই পরিস্থিতির সৃষ্টি হত না। কাজেই সংস্কার বললেই হবে না, সেটি আলোর মুখ দেখতে হবে। আমরা পরিবর্তন চাচ্ছি তবে আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তন হচ্ছে কিনা সেটাও গুরুত্বপূর্ণ। সংস্কারের পাশাপাশি যারা অন্যায় করেছে, নির্বাচনী অপরাধ করেছে বিচার হতে হবে। অন্যায় করে পার পেয়ে গেলে হবে না।

সামিনা লুৎফা বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন থেকে বৈষম্য দূরীকরণ করে ইনক্লুসিভ বাংলাদেশ করার কথা বলা হচ্ছে। তবে কোথায় বৈষম্যহীন বা ইনক্লুসিভের মধ্যে কারা আছেন—সেই জায়গাটি পরিষ্কার নয় জনমানুষের কাছে। ইনক্লুসিভ বলতে কাকে বুঝব, মাজার কী বাদ, শেখ হাসিনা চলে গেছে, বাকিরা তো আছে। তাদের ব্যাপারে কী ভাবনা সেটাও বলতে হবে।

মামুন আবদুল্লাহিল বলেন, জরিপ অনুযায়ী সরকারের প্রতি এখনও জনমানুষ আস্থাশীল। মানুষের আশা এবং হতাশা যে কোনো সময় আসতে পারে। কমিটমেন্ট যথাযোগ্যভাবে অ্যাড্রেস করতে না পারলে আস্থা আর থাকবে না।

তিনি বলেন, সংস্কার দাবি ছাত্রদের থেকে তোলা হয়েছে, তবে সংস্কার কমিশনগুলোতে ছাত্রদের প্রতিনিধিত্ব না রাখার সমালোচনা করেন তিনি। তিনি বাঙালি এবং আদিবাসী দুই কমিউনিটিকে বাম বা অন্যান্য ঘরানার রাজনৈতিক দলের বাইরে এসে নিজেদের মধ্যে সংলাপের মাধ্যমে পরস্পর সমস্যা-ভুল বোঝাবুঝি দূর করতে হবে বলে মন্তব্য করেন তিনি।

আওয়ামী লীগের পরিচ্ছন্ন ব্যক্তিদের মাধ্যমে নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে কিনা এমন প্রশ্নে  আসাদুজ্জামান বলেন, গণহত্যার যে ঘটনাটি ঘটেছে। ফেয়ার ট্রায়ালের মাধ্যমে তার বিচার হতে হবে তারপর তাদের সঙ্গে সংলাপ। আগে তাদের বিচার বা ক্ষমার বিষয়, পরে অন্য কিছু। তবে যে কোনো ধরনের ট্রায়াল আমরা চাই না। এটি ফেয়ার হতে হবে। ট্রাইব্যুনাল প্রশ্নবিদ্ধ হলে সংলাপ অনিশ্চিত হয়ে যাবে।

জরিপে ফোনে দেশের ৬৪ জেলার ৪ হাজার ৭৭৩ জনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। এরমধ্যে ২ হাজার ৩৬৩ জনের জরিপ করা হয়েছে, যা মোট নমুনার ৪৯ শতাংশ। এরমধ্যে নারী পুরুষের অনুপাত ৪৩ : ৫৭। উত্তরদাতাদের ৬৭ শতাংশ গ্রামের এবং ৩৩ শতাংশ শহরের বাসিন্দা। বিআইজিডির পূর্বের চারটি ভিন্ন গবেষণা থেকে নমুনা নেওয়া হয়েছে। সেগুলো হলো – এশিয়া ফাউন্ডেশন ও বিআইজিডি সার্ভে ২০২৪, ইয়ুথ সার্ভে ২০২১, মাদরাসা সার্ভে ২০২০ এবং ছাত্র পোল ২০২৪। এতে সমাজের নিম্নবিত্ত মধ্যবিত্ত উচ্চবিত্তের নানা পেশার মানুষকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ০৮২৩ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৬, ২০২৪
এসএএইচ