প্রসূতিসহ অসুস্থ দুই নবজাতককে উদ্ধার করলো র্যাবের হেলিকপ্টার
- আপডেট সময় : ০৫:৩৬:১৩ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৩ অগাস্ট ২০২৪ ১৭ বার পড়া হয়েছে
বন্যা দুর্গত এলাকায় উদ্ধার অভিযান, ত্রাণ বিতরণ ও চিকিৎসা সেবা অব্যাহত রেখেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)। একজন প্রসূতি ও দুজন নবজাতককে হেলিকপ্টারে উদ্ধার করে অক্সিজেন সাপোর্ট দেওয়ার মাধ্যমে সুস্থ করে তাদের নিরাপদ স্থানে পৌঁছে দিয়েছে র্যাব। এছাড়াও নারী, শিশু ও বৃদ্ধসহ পানিবন্দীদের র্যাব হেলিকপ্টারের মাধ্যমে উদ্ধার করে নিরাপদ স্থানে স্থানান্তর করছে।
শুক্রবার (২৩ আগস্ট) বিকেলে র্যাব সদর দপ্তরের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের সিনিয়র সহকারী পরিচালক আ ন ম ইমরান খান এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, স্মরণকালের সবচেয়ে ভয়াবহ বন্যার সর্বগ্রাসী রূপ দেখলো ফেনী জেলাবাসী। কয়েকদিনের ভারী বর্ষণে ডুবে গেছে ফেনী জেলার অধিকাংশ এলাকার বাড়ি ঘর, রাস্তাঘাট, স্কুল, কলেজ ও মাদরাসাসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান।
ফেনী অঞ্চলে সৃষ্ট প্রাকৃতিক বন্যায় বিপর্যস্ত লাখ লাখ পানিবন্দী মানুষ। বানভাসী এসব মানুষ অসহায় ও মানবেতর জীবন যাপন করছে। অনেকে নিজের শেষ সম্বল ও মাথা গোঁজার ঠাঁই হারিয়ে আজ দিশেহারা। কৃষক, শ্রমিক, দিনমজুরসহ বন্যাকবলিত এলাকার মানুষেরা কর্মহীন হয়ে পড়েছে। কয়েকদিন বৃষ্টি হওয়ায় খাবার ও বিশুদ্ধ পানির সংকটে বানভাসী মানুষেরা অসহায় দিন কাটাচ্ছে। এছাড়াও এখনো অনেকে পানিবন্দী হয়ে বিভিন্ন জায়গায় আটকে পড়েছে। বিশুদ্ধ পানি, প্রয়োজনীয় ওষুধ এবং চিকিৎসার অভাবে বন্যার্ত মানুষজন নানাবিধ পানিবাহিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছে।
চলমান বন্যা পরিস্থিতির শুরু থেকেই র্যাব ফোর্সেসের পক্ষ থেকে বন্যার্তদের মধ্যে ত্রাণ সহায়তা দেওয়া হয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় ফেনী জেলার বিভিন্ন এলাকায় র্যাব ফোর্সেসের পক্ষ থেকে ৫০০ বন্যার্তদের শুকনো খাবার, পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট, খাবার সেলাইন ও প্রয়োজনীয় ওষুধ বিতরণ করা হয়।
অনেক পানিবন্দী মানুষ যারা ত্রাণ পাচ্ছিলেন না এ ধরনের অসহায় মানুষদের খুঁজে বের করে র্যাবের পক্ষ থেকে ত্রাণ সহায়তা দেওয়া হচ্ছে।
তিনি জানান, বন্যা ও বন্যা পরবর্তী সময়ে খাদ্য সংকট, পানীয় জলের দুষ্প্রাপ্যতা এবং বিভিন্ন ধরসের পানিবাহিত রোগের ব্যাপারে র্যাব জনমানুষের পাশে থেকে কাজ করে যাচ্ছে। র্যাব ফোর্সেস মানবিক বিপর্যয় রোধে বন্যার্তদের মধ্যে চলমান মানবিক সহায়তা প্রদান কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে।
র্যাবের এই কর্মকর্তা আরও বলেন, ত্রাণ বিতরণ ও চিকিৎসা সেবার পাশাপাশি ফেনীর পশুরাম সীমান্তবর্তী এলাকা থেকে একজন গর্ভবতীও দুজন নবজাতক উদ্ধার করে অক্সিজেন সাপোর্ট দেওয়ার মাধ্যমে সুস্থ করে তাদের নিরাপদ স্থানে পৌঁছে দেওয়া হয়েছে।
সিনিয়র এএসপি ইমরান খান বলেন, বন্যা পরিস্থিতি কাজে লাগিয়ে কেউ যেন আইনশৃঙ্খলার অবনতি ঘটাতে না পারে সেজন্য নিয়মিত টহল কার্যক্রমের পাশাপাশি সাদা পোশাকে গোয়েন্দা নজরদারি জোরদার করা হয়েছে। পাশাপাশি এই অঞ্চলের বন্যা দুর্গতদের সহায়তার জন্য সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন সংস্থাসহ দেশের সব বিত্তবানগণকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেওয়ার জন্য র্যাব ফোর্সেসের মহাপরিচালক আহ্বান করেছেন।
তিনি জানান, ফেনী অঞ্চলে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থ মানুষদের যে কোনো মানবিক সহায়তা দেওয়ার পাশাপাশি সবার জানমালের নিরাপত্তা প্রদানে র্যাবের প্রতিটি সদস্য দেশাত্মবোধ, নিষ্ঠা ও আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছে।
বন্যার্তদের মানবিক সহায়তাসহ যে কোনো মানবিক প্রয়োজনে সকলকে সংশ্লিষ্ট র্যাব কন্ট্রোলরুমের সঙ্গে (মোবাইল নম্বর-০১৭৭৭৭১০৭৯৯) যোগাযোগের জন্য অনুরোধ জানিয়েছে র্যাব।
টিটি/এমআইএইচএস/এএসএম