অব্যবস্থাপনা, টিকিট কাটা ও ট্রেনের ছাদে যাত্রী বহনের অভিযোগে গতকাল বাংলাদেশ রেলওয়ের কঠোর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছেন হাইকোর্ট।

আদালত বলেছে, “যদি কোনো ট্রেন তার ছাদে যাত্রী বহন করে, তাহলে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

বিচারপতি মোঃ নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি খিজির হায়াতের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ বিষয়ে স্বতঃপ্রণোদিত শুনানির সময় এ মন্তব্য করেন।

হাইকোর্ট বেঞ্চ রেল কর্তৃপক্ষকে 31 শে জুলাইয়ের মধ্যে জানাতে নির্দেশ দিয়েছে যে যাত্রীদের ট্রেনের ছাদে যাত্রা করা এবং টিকিট স্ক্যাল্পিং বন্ধ করার জন্য কী পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে – এটি একটি স্ফীত মূল্যে পুনরায় বিক্রি করার জন্য অবৈধভাবে টিকিট কেনার একটি অভ্যাস।

শুনানির সময় হাইকোর্ট রেলের দুই আধিকারিককে জিজ্ঞাসা করেন, “কেন রেল পরিষেবায় এত অব্যবস্থাপনা? কেন টিকিট কাটবে? কেন মানুষ ট্রেনের ছাদে যাতায়াত করবে?”

এই ধরনের পরিস্থিতি চলতে দেওয়া যাবে না, বেঞ্চ পর্যবেক্ষণ করেছে।

আগের দিন বাংলাদেশ রেলওয়ের যুগ্ম মহাপরিচালক এ এম সালাহউদ্দিন ও মহাপরিচালক (ট্রাফিক) মো নাহিদ হাসান খান এবং sohoz.com এর কর্মকর্তা জুনায়ের হোসেন রেলওয়ে সেবায় অব্যবস্থাপনা রোধে গৃহীত পদক্ষেপগুলো জানাতে হাইকোর্ট বেঞ্চে হাজির হন।

এ এম সালাহউদ্দিন হাইকোর্ট বেঞ্চকে বলেন, যাত্রীদের ছাদে যাতায়াত করতে বাধা দেওয়ার ক্ষেত্রে তাদের কিছু সীমাবদ্ধতা রয়েছে।

হাইকোর্ট বেঞ্চ তখন কর্মকর্তাকে জিজ্ঞাসা করেছিল যে ছাদে যাত্রীরা ভাড়া দেয় কিনা।

যদি যাত্রীদের ভাড়া দেওয়ার পরেও ছাদে ভ্রমণের অনুমতি দেওয়া হয় তবে এটি সম্পূর্ণ দুর্নীতি এবং যে কোনও মূল্যে এটি বন্ধ করা উচিত, হাইকোর্ট বেঞ্চ বলেছে, লোকেদের ছাদে থাকতে দেওয়া হলে দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।

বিচারপতি নজরুল ইসলাম তালুকদার কর্মকর্তাদের উদ্দেশে বলেন, “আপনি চুপ থাকতে পারবেন না। এটা হতে দেওয়া যাবে না। আপনাদের দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করতে হবে।”

ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল একেএম আমিন উদ্দিন মানিক আদালতকে বলেন, রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ সার্ভিসে অব্যবস্থাপনা তদন্তে কমিটি গঠনের পদক্ষেপ নিয়েছে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র মহিউদ্দিন রনি সম্প্রতি আন্দোলনের পর বিষয়টি সামনে আসে।

বুধবার হাইকোর্ট বেঞ্চ রেল পরিষেবার উন্নতির দাবিতে রনির অবস্থান কর্মসূচি এবং এ বিষয়ে গৃহীত পদক্ষেপ সম্পর্কে জানতে চান।

গতকাল দ্য ডেইলি স্টারে রনির একটি ছবি এবং একটি ক্যাপশন প্রকাশিত হওয়ার পর বেঞ্চ স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে এই আদেশ দেয়।

দুর্নীতি দমন কমিশনের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী খুসরিদ আলম খান।