এইচএসসির ফল সাবজেক্ট ম্যাপিংয়েই, প্রক্রিয়া ঠিক করবে বিশেষ কমিটি
- আপডেট সময় : ১০:১২:৩০ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২১ অগাস্ট ২০২৪ ১৯ বার পড়া হয়েছে
পরীক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে এইচএসসি ও সমমানের স্থগিত পরীক্ষাগুলো বাতিল করেছে সরকার। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনায় অনিবার্য কারণে বাকি পরীক্ষাগুলো বাতিলের আদেশ জারি করেছে ১১টি শিক্ষা বোর্ডের মোর্চা বাংলাদেশ আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় কমিটি। এখন কীভাবে ফলাফল তৈরি ও প্রকাশ করা হবে তা নিয়ে কাজ শুরু করবে শিক্ষা বোর্ডগুলো।
তবে সাবজেক্ট ম্যাপিংয়ের মাধ্যমেই ফলাফল প্রকাশ করা হবে বলে জানিয়েছেন আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় কমিটি এবং ঢাকা মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অধ্যাপক মো. আবুল বাশার। তাছাড়া কীভাবে সাবজেক্ট ম্যাপিং করে ফলাফল তৈরি করা হবে তা ঠিক করতে একটি বিশেষ কমিটি গঠন করবে আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় কমিটি।
মঙ্গলবার (২০ আগস্ট) রাতে জাগো নিউজকে তিনি এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
অধ্যাপক আবুল বাশার বলেন, করোনাভাইরাস পরবর্তী সময়ে আমরা সাবজেক্ট ম্যাপিং করে পাবলিক পরীক্ষার ফলাফল প্রস্তুত করেছিলাম। সেই কমিটিটা এখনও রয়েছে। এ কমিটি এখন বিলুপ্ত করে নতুন আরেকটা বিশেষ কমিটি গঠন করা হবে। তারা বিষয়টি নিয়ে কাজ করে সুপারিশপত্র জমা দেবেন। তাদের সুপারিশের ভিত্তিতে ফল প্রস্তুত এবং প্রকাশ করা হবে।
কবে নাগাদ কমিটি গঠন ও কাজ শুরু হবে, এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘আজ তো কর্মদিবস শেষ। আগামীকাল বিষয়টি নিয়ে কাজ শুরু হতে পারে। কমিটি হলে তারা দায়িত্ব বুঝে নিয়ে শিগগির কাজ শুরু করবেন।’
সাবজেক্ট ম্যাপিং হতে পারে যেভাবে
ফলাফল প্রস্তুতে সাবজেক্ট ম্যাপিংয়ের কথা বলা হলেও বিষয়টি এখনো খোলাসা করেনি শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও বোর্ডগুলো। বোর্ডের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, যে পরীক্ষাগুলো শিক্ষার্থীরা দিয়েছে, সেগুলো ধরে বাকি পরীক্ষাগুলোর ম্যাপিং হতে পারে এসএসসি পরীক্ষার ভিত্তিতে। আবার কলেজে শিক্ষার্থীদের দেওয়া সর্বশেষ টেস্ট পরীক্ষার ফল অনুসরণ নিয়েও চিন্তাভাবনা চলছে৷ এটি এখনো চূড়ান্ত নয়।
জানতে চাইলে আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় কমিটির সভাপতি অধ্যাপক তপন কুমার সরকার মঙ্গলবার রাতে জাগো নিউজকে বলেন, কীভাবে ফল তৈরি ও প্রকাশ করা হবে, তা নিয়ে এখনো চূড়ান্ত কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। আপাতত পরীক্ষা বাতিলের সিদ্ধান্ত হয়েছে।
শিক্ষার্থীদের ধৈর্য ধরার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, সব বোর্ড এটা নিয়ে আলোচনা করবে। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ও এ বিষয়ে নির্দেশনা দেবে। তারপর কীভাবে ফল তৈরি ও প্রকাশ করা হবে, তা চূড়ান্ত হবে। শিক্ষার্থীরা একটু ধৈর্য ধরুক। আমরা সব জানিয়ে দেবো।
এর আগে দুপুরে শিক্ষা উপদেষ্টার সভাপতিত্বে সচিবালয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয় বৈঠকে বসেন সব বোর্ডের চেয়ারম্যানরা। সেখানে অর্ধেক প্রশ্নপত্রে স্থগিত পরীক্ষাগুলোর নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়।
বিষয়টি গণমাধ্যমে প্রকাশের পরপরই সচিবালয়ের আশপাশে আগেই জড়ো হওয়া বিক্ষুব্ধ এইচএসসি পরীক্ষার্থীরা হুড়মুড় করে ভেতরে ঢুকে পড়েন। তারা একপর্যায়ে স্থগিত পরীক্ষা বাতিল করে সাবজেক্ট ম্যাপিংয়ের মাধ্যমে ফল প্রকাশের দাবিতে ১ ঘণ্টার আলটিমেটাম দেন।
শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে একপর্যায়ে শিক্ষা সচিব ড. শেখ আব্দুর রশিদ, ঢাকা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক তপন কুমার সরকারসহ সংশ্লিষ্টরা তাৎক্ষণিক বৈঠক করে স্থগিত এইচএসসি পরীক্ষাগুলো বাতিলের ঘোষণা দেন। এরপর শিক্ষার্থীরা সেখান থেকে ফিরে যান।
এদিকে বিকেলে পরীক্ষা বাতিল করে আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় কমিটির সভাপতি এবং ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক তপন কুমার সরকারের সই করা আদেশ জারি করা হয়।
এতে বলা হয়েছে, অনিবার্য কারণবশত এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষা ২০২৪-এর স্থগিত পরীক্ষাসমূহ বাতিল করা হলো। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য অনুরোধ করা হলো।
গত ৩০ জুন এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষা শুরু হয়। এতে পরীক্ষার্থী ছিলেন ১৪ লাখ ৫০ হাজার ৭৯০ জন। প্রথম দফায় প্রকাশিত রুটিন অনুযায়ী ৮ দিন পরীক্ষা হওয়ার পর কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে সৃষ্ট পরিস্থিতিতে ১৮ জুলাইয়ের সব পরীক্ষা স্থগিত করা হয়। এরপর আর তিন দফায় পরীক্ষা স্থগিত করে সরকার।
সূচি অনুযায়ী এখনও ১৩ দিনের মোট ৬১টি বিষয়ের পরীক্ষা গ্রহণ বাকি ছিল। বিভিন্ন বিভাগের (বিজ্ঞান, মানবিক ও বাণিজ্য) বিভিন্ন বিষয় থাকায় এতগুলো পরীক্ষা আটকে গেছে। যদিও প্রত্যেক শিক্ষার্থীকে ১৩টি বিষয়ে পরীক্ষায় অংশ নিতে হয়। এর মধ্যে বাধ্যতামূলক বাংলা ও ইংরেজির চারটি বিষয় (প্রথম ও দ্বিতীয়পত্র) এবং আইসিটি। ৮টি বিষয় ঐচ্ছিক (অপশনাল)।
এএএইচ/এমআইএইচএস